
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। আগামীকাল, বৃহস্পতিবারই হবে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ফ্লোর টেস্ট (Floor Test)। বুধবার রাতে এমনই নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারীকে এই ফ্লোর টেস্ট করার অনুমতি দেয় (Maharasthra Political Crisis)। অর্থাৎ আগামীকালই উদ্ধবকে সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। সরকারের থাকতে হলে বৃহস্পতিবারের আস্থা ভোটে জিততেই হবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে সাংবিধানিক ধারা-উপ ধারা নিয়ে তীব্র বাদানুবাদ চলে। উদ্ধব ঠাকরের পক্ষে বিশিষ্ট আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি এদিন আদালতে বলেন, রাজ্যপাল জেড গতিতে চলছেন। সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণের পরীক্ষা কাল যদি দিতে না হয় তাহলে কি স্বর্গ ভেঙে পড়বে? সিংভির আরও বক্তব্য, শিবসেনার ১৬ জন বিধায়কের সদস্য পদ খারিজের দাবি স্পিকারের বিবেচনাধীন। এই অবস্থায় কী করে ফ্লোর টেস্ট হতে পারে?
অন্যদিকে রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারী এবং বিদ্রোহী বিধায়ক একনাথ শিন্ডের শিবিরের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টকে বলেন, সদস্যপদ বাতিল সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন সেই মামলায় ১১ জুলাই ফের শুনানি হওয়ার কথা। তাঁদের আরও বক্তব্য, সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট কারও সদস্য পদ খারিজ করেনি। ফলে আগামীকাল সংখ্যা গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ভোটাভুটি হলে সব বিধায়কই ভোট দিতে পারবেন।
এদিকে আজ সন্ধ্যায় যখন সুপ্রিম কোর্টে তীব্র আইনি লড়াই চলছে, তখন মুম্বইয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন উদ্ধব ঠাকরে। এই বৈঠকে যাওয়ার আগে উদ্ধব মহারাষ্ট্র সচিবালয়ে শিবাজির প্রতিকৃতিতে ফুল মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সকলের সঙ্গে করমর্দন করে সচিবালয় ছাড়েন। তখন তাঁর সঙ্গী ছিলেন পুত্র তথা পর্যটন মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, উদ্ধব ধরেই নিয়েছেন এটিই ছিল তাঁর শেষ মন্ত্রিসভার বৈঠক। কারণ আগামীকাল ফ্লোর টেস্ট যদি নাও হয়, তাহলেও তাঁর পক্ষে সরকার বাঁচানোর আর কোন রাস্তা খোলা নেই।
সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করলে আজই পদত্যাগ করতে পারেন।
ওদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়কেরা গুয়াহাটি থেকে বিমানে গোয়া পৌঁছেছেন। সেখান থেকে আগামীকাল সকালে মুম্বইয়ে এসে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দেবেন, এমনই ঠিক আছে।
উদ্ধবের পক্ষে আইনজীবী সিংভি বলেন, কংগ্রেসের দুই বিধায়ক বিদেশে আছেন। এনসিপির এক বিধায়কের করোনা হয়েছে। তাঁদের পক্ষে এখন ভোটাভুটিতে অংশ নেওয়া সম্ভব নয়। তাই ভোটাভুটি পিছিয়ে দেওয়া হোক। বিচারপতিরা বারেবারে সিংভিকে প্রশ্ন করেন, বিধায়ক পদ খারিজ ও ফ্লোর টেস্ট এই দুটি কীভাবে সম্পর্কিত।
বুধাবার বিকেল থেকে শিবসেনার আবেদনের শুনানি শুরু হয় বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জেবি পাড়িয়ালা নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চে। যদিও এদিন সুপ্রিম কোর্ট উদ্ধবের আবেদন নাকচ করে দেয়। জানায়, বৃহস্পতিবার বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে। আস্থাভোট শেষ করতে হবে।
ইস্তফা দিলেন উদ্ধব ঠাকরে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেই সিদ্ধান্ত