
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দর্জির দোকানে ঢুকে আইসিস (ISIS) কায়দায় গলা কেটে তাঁকে খুন করেছে দুই যুবক। রাজস্থানের উদয়পুর (Udaipur) তারপর থেকেই উত্তাল। যত দিন যাচ্ছে, ততই এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মোড়ক খুলছে একে একে। জানা গেল, খুন করতে যাওয়ার আগেই নাকি আইসিসের ভিডিও দেখেছিল ওই দুজন। ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কেউ।
উদয়পুরে দর্জি কানহাইয়ালালকে (Kanhaiya Lal) খুনের ঘটনায় দুই অভিযুক্ত রিয়াজ আখতারি (Riyaz Akhtari) এবং ঘাউস মহম্মদকে (Ghouse Mohammad) বৃহস্পতিবার ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় আদালত।
মহম্মদ রফিক নামে ঘাউসের এক প্রতিবেশী জানাচ্ছেন, খঞ্জিপীরে রাজা কলোনিতে বাবার সঙ্গে মিলে ছোট্ট একটি দোকান চালাত ঘাউস। অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ হিসাবেই এলাকায় পরিচিত ছিল সে। যদিও এর আগে কোনও হিংসার ঘটনায় তার নাম জড়ায়নি।
আর এক প্রতিবেশী মহম্মদ উমর জানিয়েছেন, আগে একটি বিনিয়োগ সংস্থায় কালেকশন এজেন্ট হিসাবে কাজ করত ঘাউস। পরে প্রতারণার অভিযোগে সেই সংস্থা বন্ধ হয়ে গেলে দোকান খুলে বসে সে। প্রতিবেশীরা আরও জানিয়েছেন,পরিবারের সম্মান বা বাবার স্বাস্থ্য নিয়ে কোনও মাথাব্যথাই ছিল না ঘাউসের।
কিছু দূরেই মহম্মদ উমরের বাড়ি। তাঁর বাড়িতেই স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে গত ১২ জুন থেকে থাকছিল রিয়াজ আনসারি। পেশায় ঝালাইকর্মী রিয়াজ একতলার দুটি ঘর নিয়ে থাকত। সন্দেহজনক কোনও কাজে তাকে জড়িত থাকতে দেখেননি, এমনটাই জানাচ্ছেন উমর। ঝালাইয়ের কাজে রিয়াজের এক সহকর্মী কায়ুম বেগ জানিয়েছেন, গত দুই দশক ধরে উদয়পুরেই বাস রিয়াজের।
ঘটনায় সামনে আসছে পাকিস্তান যোগের সম্ভাবনাও। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, নৃশংস এই খুনের আগে আইসিসের ভিডিও দেখেছিল অভিযুক্তরা। এমনকি, খুনের আগে এবং পরে পাকিস্তানের সঙ্গেও নাকি যোগাযোগ করেছিল রিয়াজ ও ঘাউস।
গত বুধবার রিয়াজ ও ঘাউস মিলে গলা কেটে খুন করে দর্জি কানহাইয়ালালকে। সেই ঘটনার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে ইন্টারনেটেও ছড়িয়ে দেয় তারা। ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দেশে।
হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র একটি কারখানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এস কে ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস ফ্যাক্টরি নামক ওই কারখানাতে তারা নিজেরাই খুন করার জন্য ওই অস্ত্রগুলি তৈরি করেছিল বলে অভিযোগ। কানহাইয়ালালকে হত্যার আগে ও পরে ওই কারখানাতেই তারা কয়েকটি ভিডিও করেছিল বলে জানা যাচ্ছে। বর্তমানে দুই অভিযুক্তের বাড়ি কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে রাখা রয়েছে।
আরও পড়ুন: নূপুরকে কড়া কড়া কথা শোনাল সুপ্রিম কোর্ট, ধমক দিল্লি পুলিশকেও