
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: পাশাপাশি দুটো পুজো। একটির বয়স ১৮। অন্যটি এবারই প্রথম। চাঁদা তোলা নিয়ে চাপানউতোর চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। কিন্তু দশমীতে ভাসানকে কেন্দ্র করে তা বড় আকার নিল আরামবাগে (Arambagh)। অভিযোগ পিটিয়ে মারা হয়েছে এক কিশোরকে। মৃতের নাম সাগর থান্ডার (১৬)।
হুগলির আরামবাগ থানার ডিহিবায়রা এলাকার ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। গ্রামে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। যদিও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সাগরের মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়। ওই কিশোরের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাকে ঘিরে চাপা উত্তেজনা রয়েছে আরামবাগের ডিহিবায়রা এলাকায়। নতুন করে যাতে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি না হয় তার জন্য এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ বাহিনী।
সন্ধেবেলাতেই বাড়ি ফিরছেন ডোনা, অনেকটাই সুস্থ সৌরভ-জায়া
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগের ডিহিবায়রা এলাকায় ১৮ বছর ধরে মনষামাতা মিলন সংঘের পরিচালনায় দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। এবছর তার পাশে পান পাড়াতে একটি দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে। অভিযোগ, পুজোর চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন ধরেই দুই পুজো কমিটির মধ্যে বিবাদ চলছিল। পরিস্থিতি ঘোরালো হয় দুর্গাপুজোর ভাসানকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, মিলন সঙ্ঘের পুজোর সঙ্গে যুক্ত লোকজন বুধবার রাতে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে যান। সেই সময়ে প্রতিমা নিরঞ্জনের ঘাটে ছিল পান পাড়ার প্রতিমাও। কারা আগে বিসর্জন দেবে তা নিয়ে ঝামেলা বাঁধে দুই কমিটির। তারপর শুরু হয় ব্যাপক মারামারি।
রুমা সাঁতরা রামে এক মহিলা মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। তাঁকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুপক্ষের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে মারামারি হয়। অভিযোগ, রাতে প্রতিমা ভাসান দিয়ে সাগর থান্ডার বাড়ি ফিরছিল। তার পরিবারের অভিযোগ, সেই সময় তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। দীর্ঘক্ষণ পর ফাঁকা রাস্তায় তাকে পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের লোকজন। স্থানীয় এক চিকিৎসককে ডেকে তার চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করা হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সাগরের মা দীপা থান্ডারের অভিযোগ, নতুন পুজো কমিটির সদস্যরা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে তাঁর ছেলেকে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে যে সমস্ত লক্ষণ দেখা যায় সাগরের ক্ষেত্রে তার কিছুই ছিল না। তার যেটুকু অনুমান মারধর করেই মেরে ফেলা হয়েছে তাকে। দোষীদের কঠোর শাস্তির ও দাবি জানিয়েছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা।
যদিও পানপাড়া পুজো কমিটির সদস্য শানু পান বলেন, “দিদি টাকা দিয়েছে। তার পরেও চাঁদা তুলেছে ওরা। বিসর্জন নিয়ে একটা গন্ডোগোল হয়। ওরা কাদা মেখে আমাদের লোকেদের মারধর করে। আমরা কেবল আত্মরক্ষা করেছি। দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। আজ সকালে আমার এক ভাইকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে।”
আরামবাগ থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।পু লিশ সূত্রে খবর একাদশীর ভোর রাতে ডিহিবায়রা রাস্তার ধার থেকে কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আঘাত দেখে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে দুর্ঘটনা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। আরামবাগ থানা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।