
মুম্বইয়ে ব্যাঙ্ক অব বরোদার চিফ ইকনমিস্ট সমীর নারাং বলেন, “বাজারে এখন চাহিদা কম। তাই বিভিন্ন সংস্থা কাঁচামালের বাড়তি দাম ক্রেতাদের ওপরে চাপিয়ে দিতে পারেনি। বাজার চাঙ্গা হলেই পরিস্থিতি বদলে যাবে।”
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়লেই মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেবে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা ব্যাহত হতে পারে। অবশ্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস মনে করেন, মুদ্রাস্ফীতির পর্ব হবে ‘স্বল্পস্থায়ী’।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা যায়, অতিমহামারীর মধ্যে অনেকেরই উপার্জন কমেছে। সেই সঙ্গে দাম বেড়েছে অনেক জিনিসের। তাই সহজে কিছু কেনাকাটা করতে চাইছেন না ভারতীয়রা। জুলাই মাসে দেশে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা ব্যাপক কমেছে। শনিবার এমনই জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ক্রেতাদের মনোভাব সম্পর্কে জানার জন্য ১৩ টি বড় শহরে ৫৩৮৪ জনের ওপরে সমীক্ষা করেছিল আরবিআই। যে সূচক দিয়ে ক্রেতাদের মনোভাবের পরিমাপ করা হয়, তার নাম কারেন্ট সিচুয়েশন ইনডেক্স (সিএসআই)। এই সূচক ১০০-র নীচে থাকা মানে ক্রেতারা আশাবাদী নন। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, জুলাই মাসে সিএসআই ছিল ৪৮.৬। মে মাসে ওই সূচক ছিল ৪৮.৫ এর ঘরে।
আরবিআই জানিয়েছে, আগামী দিনেও বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ ক্রেতারা মনে করছেন, ২০২২ সালেও অর্থনীতি সংকুচিত হবে। তাই তাঁরা মূলত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য কেনার ওপরেই জোর দিচ্ছেন। তার বাইরে বিশেষ কিছু কিনছেন না। বেশিরভাগ ক্রেতা মনে করছেন, আগামী দিনে মুদ্রাস্ফীতি ঘটবে। সেজন্য তাঁরা যথাসম্ভব বেশি অর্থ এখন জমিয়ে রাখছেন।
অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সুদের হার যথাসম্ভব কম রেখেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। শুক্রবার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানান, অর্থনীতি যাতে কোভিডের দ্বিতীয় ওয়েভের ধাক্কা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারে, সেজন্য রেপো রেট অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সুদে অন্যান্য ব্যাঙ্ককে ঋণ দেয়, তাকে বলা হয় রেপো রেট। রেপো রেট আগের মতোই থাকছে চার শতাংশ। রিভার্স রেপো রেটও আগের মতোই থাকছে ৩.৩৫ শতাংশ। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নিজে যে সুদে অন্যান্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেয়, তাকে বলা হয় রিভার্স রেপো রেট।