
কী আছে সেই প্রস্তাবে?
আগামী পার্টি কংগ্রেসে যাতে শি জিনপিংয়ের আধিপত্য অটুট থাকে এবং তা যাতে তাঁর জীবদ্দশা পর্যন্ত চলতে পারে তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে প্লেনামে। যা দেখে অনেকেই বলছেন, সমাজতান্ত্রিক রাংতার মোড়কে শি-কে চিনা সাম্রাজ্যের সম্রাট হিসেবে তুলে ধরার সাংগঠনিক প্রয়াস স্বীকৃতি পেয়ে গেল।চিন বিপ্লবের অবিসংবাদী নেতা মাও সে তুং এবং পরে দেং জিয়াওপিং-এর সময়ে এমন দুটি ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাশ হয়েছিল। আটের দশকের পরে ফের এরকম একটি প্রস্তাব গৃহীত হল। অনেকের মতে, যেখানে সমষ্টিগত নেতৃত্বের তকমা লাগিয়ে কায়েম হতে চলেছে ব্যক্তিতন্ত্র।
পার্টি এবং সরকার-দুটোই নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপার নিয়ে অনেক বাম ঘেঁষা সংবেদনশীল মানুষও শি-কে স্বৈর শাসক হিসেবে দেগে দিতে চাইছেন। বর্ধমানের এক সিপিএম নেতার কথায়, সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ে যতটা স্বচ্ছন্দে গর্ব করা যেত চিন নিয়ে তার সুযোগ নেই। কারণ চিন পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে থাকলেও আসলে মতাদর্শগত ভাবে অবক্ষয়ের কানাগলিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। যা শক্তিশালী করছে আন্তর্জাতিক পুঁজিবাদী চরিত্রকে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে প্লেনাম কী?
পৃথিবীর যে কোনও দেশের কমিউনিস্ট পর্টির রাজনৈতিক লাইন অদলবদল হয় পার্টি কংগ্রেসে। সব দেশেই নিয়মটা প্রায় এক। নিকারাগুয়া থেকে বাংলাদেশ কিংবা ভারত- সামগ্রিক সাংগঠনিক কাঠামোর খুব একটা ফারাক নেই। দুই পার্টি কংগ্রেসের মধ্যবর্তী সময়ে যদি সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেয় দল তাহলে প্লেনাম ডাকতে হয়। যেমন এদেশে সিপিএম ১৯৭৮ সালে সালকিয়া প্লেনাম করেছিল। তারপর ২০১৫ সালে কলকতা প্লেনাম।
অনেকের মতে, এই দলের মধ্যে নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখলেন শি। যেখানে কোনও বাধা, বিতর্ক কার্যত দেখাই যাচ্ছে না। যাকে অশনি সংকেত বলতেও ছাড়ছেন না অনেকে। অনেকের বক্তব্য, সিপিসিতে যা হল তা আসলে আগ্রাসী আধিপত্যবাদের নামান্তর। যাকে তুলে ধরা হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক মলাটে!