
দ্য ওয়াল ব্যুরো : মাটির দেওয়াল, বাঁশের বেড়া, খড়ের ছাউনি। আদি অকৃত্রিম গ্রামীণ আবহ। সেই মাটির ঘর আলো করেই এবার নিয়মিত বসবে পাঠশালা। প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বালি দ্বীপে বিরাজনগর গ্রামের শিশুদের চালু হল প্রাথমিক স্কুল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের এই গ্রামে খুব বেশি মানুষ লেখাপড়া জানেন না। তার ওপর করোনা মহামারীর সন্ত্রাসে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছিল। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? তাই এগিয়ে এসেছে বজবজের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের উদ্যোগে ‘প্রত্যাশার পাঠশালা’-র পথচলা শুরু হয়েছে গ্রামের তিরিশজন খুদে পড়ুয়াকে নিয়ে। তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছেন গ্রামের মায়েরা।
পাঠশালার শিক্ষিকা ঋতুস্মিতা মিস্ত্রি জানান, আমাদের গ্রামের দরিদ্র বাচ্চাদের জন্য এই পাঠশালা। এই মহামারীর সময় সকলে তো আর অনলাইনে পঠনপাঠনের সুযোগ পাচ্ছে না। সকলের বাড়িতে স্মার্টফোন আছে এমনও নয়। ফলে কেউ কেউ এই সুবিধা পেলেও বাকিরা বঞ্চিত হচ্ছে। অনেকের পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছে। এখানে বাচ্চাদের আমরা সরাসরি পাঠের সুযোগ দিতে পারব। করোনাজনিত স্বাস্থ্যবিধি ও দূরত্ববিধি মেনেই পড়াশোনা চলবে।
দেখুন ভিডিও।
যাঁরা এই প্রত্যন্ত গ্রামে স্কুলনির্মাণের কথা ভেবেছেন, স্কুলের জন্য জমি দিয়েছেন এবং যে মায়েরাও অনেক পরিশ্রম করে এই স্কুল গড়েছেন, তাঁদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় পাঠশালা গড়ে উঠেছে।
সুন্দরবনের মতো প্রত্যন্ত গ্রামে এই পাঠশালা চালু হওয়ায় খুশি এলাকার মানুষজন। এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই তফশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত। অভাব সর্বত্র। এদিন বজবজ প্রত্যাশার পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের হাতে পঠনপাঠনের সব ধরনের সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। কোভিড বিধি মেনেই নিয়মিত বসবে প্রত্যাশা পাঠশালা। যখন স্বেচ্ছাসেবীদের তরফে জায়গা খোঁজ হচ্ছিল, তখন এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা নীলিমা মণ্ডল। তিনিই জমি দেন পাঠশালা নির্মাণের জন্য। তিনি জানিয়েছেন, গ্রামে হতদরিদ্র মানুষের বাস। গ্রামের বাচ্চারা যাতে পড়াশোনা করতে পারে তার জন্যই স্কুল গড়তে জমি দিয়েছি। এই বাচ্চারাই আগামী দিনে বড় হবে, মানুষের মতো মানুষ হবে, এটাই চাওয়া।