Latest News

কোভিড -১৯ এ মৃতের দেহ থেকে সংক্রমণ? কী বলছে এইমসের গবেষণা ?

দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোভিড ১৯ এ মৃতের দেহ থেকে নাাকি সংক্রমণ ছড়ায় বলে মৃত্যুর পর দেহ সত্কারের জন্য তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় না। একেবারে প্লাস্টিকে মৃতদেহ মুড়ে ফেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শেষকৃত্যের জন্য। পরিবারের প্রিয়জনেরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে মৃতকে তাঁদের ইচ্ছেমতো সম্মানের সঙ্গে চিরবিদায় জানাতে পারেন না। ভয়ে, আতঙ্কে দূরে সিঁটিয়ে থাকেন। নিতান্ত অবহেলায় চলে যেতে হয় মৃতকে। অনেক ক্ষেত্রে ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ে থাকে বাড়িতেই মারা যাওয়া করোনায় মৃতের দেহ। কিন্তু সত্যিই কি করোনাভাইরাস অতিমারীতে মৃতের দেহ থেকে সংক্রমণ ছড়ায়? এইমসের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কোভিড ১৯ এ মৃত মানুষের দেহ থেকে মারণ ভাইরাস ছড়িয়ে সংক্রমণের সম্ভাবনা খুবই কম।

দেশের অন্যতম শীর্ষ চিকিত্সা প্রতিষ্ঠানের ফরেনসিক প্রধান ডঃ সুধীর গুপ্তা জানাচ্ছেন, করোনা সংক্রমিত মৃত ব্যক্তির নাকের ভিতরে, মুখগহ্বরে মৃত্যুর ১২ থেকে ২৪ ঘন্টা পর করোনাভাইরাস সক্রিয় থাকে না। ফলে মৃতদেহ থেকে সংক্রমণের ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। কোভিড ১৯ পজিটিভ মেডিকো-লিগ্যাল কেসের ব্যাপারে এইমসের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে গত এক বছরে একটি পাইলট সমীক্ষা চালানো হয়। পোস্ট মর্টেম হয় করোনা মৃতের দেহের।

ডঃ গুপ্তা বলেছেন, মৃত্যুর ১২ থেকে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে প্রায় ১০০ মৃতদেহ পুনরায় পরীক্ষা করে দেখা হয় করোনা সংক্রমণ হয় কিনা, দেখার জন্য। কিন্তু ফল নেগেটিভ বেরয়। মৃত্যুর ২৪ ঘন্টা পর মৃতের নাসিকা, মুখগহ্বরে আদৌ সক্রিয় থাকে না ভাইরাস।

করোনা মৃতের দেহ থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে এলাকাবাসী শ্মশানে দাহ করতে দিচ্ছে না, এমন অজস্র ঘটনা ঘটেছে অতিমারী কালে। যদিও অতিমারীর শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা বারবার অভয় দিয়েছেন, মৃতদেহ থেকে সংক্রমণের বিপদ খুবই কম। তবে ডঃ গুপ্তা জানিয়েছেন, সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে নাসিকা ও মুখগহ্বর বন্ধ করে রাখা উচিত যাতে ক্যাথিটার, টিউব খুলে নেওয়ার সময় বডি ফ্লুইড বা ওই জাতীয় পদার্থ বাইরে না বেরয়।

আগাম সাবধানতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে কোভি ১৯ এ মৃতের দেহ যে হাসপাতাল কর্মীরা নাড়াঘাঁটা করছেন, তাঁদের মাস্ক. গ্লোভস, পিপিই কিট পরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে জানিয়েছেন, মৃতের দেহ পোড়ানোর পর তার অস্থি বা চিতাভস্ম সংগ্রহ করা যেতেই পারে। তা সম্পূর্ণ নিরাপদ। সংক্রমণের কোনও ঝুঁকিই থাকে না।

কোভিডে মৃতের মর্যাদা রক্ষার স্বার্থেই এই গবেষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সরকারি গাইডলাইনে বলা হয়েছে, মর্গের কর্মী, পুলিশকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণের বিপদ ঠেকাতে একান্ত দরকার হলে নন ইনভ্যাসিভ অটোপসি পদ্ধতি কাজে লাগানো উচিত। অটোপসি করা সার্জনের যদি মনে হয়, তিনি শব ব্যবচ্ছেদ না করে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট করে বলতে পারবেন না, তবে একেবারে ন্যূূনতম ইনভেসিভ কাটাছেঁড়া করতে পারেন। তবে সেটা যে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ প্রক্রিয়া, তাও  মাথায় রাখতে হবে।

 

 

You might also like