
বয়স্ক, বিশেষভাবে সক্ষমদের সাগরমেলা ভ্রমণের নয়া উদ্যোগ, একাধিক প্রযুক্তি আনছে সরকার
কথায় বলে ‘সব তীর্থ বার বার, গঙ্গাসাগর এক বার’! মকর সংক্রান্তির এই মহামেলার আয়োজনে প্রতি বছরই কোনও খামতি রাখা হয় না বলে দাবি করে রাজ্য সরকার। মেলার জন্য সরকারের খরচ হয় কোটি কোটি টাকা। মেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার পিছনে সেচ, পূর্ত এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরেরও ভূমিকা থাকে। বিনিময়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা পান দর্শনার্থীরা। করোনা আবহে গত বছর থেকে মেলা উপলক্ষে আরও বেশি করে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ বছরেই তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গঙ্গাসাগর মেলা পরিদর্শনের জন্য বয়স্ক, অসুস্থ ও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বৃদ্ধাশ্রমগুলিতে যাঁরা থাকেন তাঁরা যদি মেলা ভ্রমণ করতে চান, তাহলে নিরাপদে ঘুরিয়ে ফের হোমে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। শারীরিক ও মানসিকভাবে অক্ষম, অসুস্থদের জন্যও থাকছে একই ব্যবস্থা। এর জন্য সরকারি ওয়েবসাইট gangasagar.in-এ যেতে হবে। কোনও হোম কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন বিশেষভাবে সক্ষম বা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের গঙ্গাসাগর মেলা ঘুরিয়ে দেখাবেন, তাহলে সরকারি সাহায্যে এখন তা সম্ভব। নিরাপদে ও দায়িত্ব নিয়ে সরকার এই সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নিয়েছে যা তারিফ পাচ্ছে নানা মহলে।
গঙ্গাসাগর ভ্রমণ ছাড়াও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আরও কিছু প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেমন-মেলায় কেউ হারিয়ে গেলে খুঁজে পাওয়ার জন্য পরিচয় নামে কিউআর বেসড ট্র্যাকিং সিস্টেম রাখা হচ্ছে। বয়স্কদের কিউআর বেসড হাতঘড়ি দেওয়া হবে যাতে হারিয়ে গেলে সহজেই তাঁদের ট্র্যাক করা যেতে পারে। তাছাড়া ই-দর্শনের ব্যবস্থাও রাখছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, যাঁরা মেলায় আসতে পারবেন না, তাঁরা আবেদন করলে বাড়িতে স্নানের পবিত্র জল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে জেলা প্রশাসন। ‘ই-স্নান’ নামে একটি ওয়েবসাইট এ বছরই গঙ্গাসাগর মেলার সময়ে তৈরি হয়েছিল। চলতি বছর মেলা উপলক্ষে কুরিয়ারের পাশাপাশি ডাকবিভাগের মাধ্যমেও জল পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যাম্বুল্যান্স ও ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা রাখা হবে। গ্রিন করিডরের মধ্য দিয়ে রোগীদের দ্রুত নিয়ে যাওয়ার জন্য আলাদা রাস্তার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া, পর্যাপ্ত সিসিটিভির নজরদারি ব্যবস্থা করা হবে। মোবাইল, ইন্টারনেট পরিষেবার উন্নতি করার উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। সাগর মেলায় কাছাকাছি কোভিড হাসপাতাল ও আইসিইউ রাখার ভাবনাচিন্তাও করছে প্রশাসন।