Latest News

সাইকেল নিয়ে ছোটেন বাড়ি বাড়ি, বিনা বেতনে ছাত্র পড়ান ডায়মন্ড হারবারের দিলীপ স্যার

দ্য ওয়াল ব্যুরো: বয়স ৬০ পেরিয়েছে। অভসর নেওয়ার কথা ভাবতেই পারেন না। এখনও নিয়মিত স্কুলে যান। সাইকেল নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়েও ছাত্র পড়িয়ে আসেন। মেধাবী, দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন নেওয়ার কথাও ভাবতেও পারেন না এই মাস্টারমশাই (Teachers Day 2022)। জ্ঞানের আলো জ্বালানোই তাঁর লক্ষ্য, ছাত্র পড়ানোতেই তাঁর জীবনের সার্থকতা। ‘শিক্ষক হলেন জ্ঞানের আলো সত্য পথের যাত্রী’..কবি সত্যেন রায়ের লেখা এই কবিতাটা বিশেষভাবে তাঁর জন্যই প্রযোজ্য। তিনি হলেন ডায়মন্ড হারবারের দিলীপ বেরা স্যার।

ডায়মন্ড হারবার স্কুলের এই মাস্টারমশাইকে এক ডাকে সকলেই চেনেন। কুলপির নিশ্চিন্তপুর এলাকার বাসিন্দা। ডায়মন্ড হারবার হাইস্কুলে স্কুলে ফিজিক্যাল এডুকেশনের শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন (Teachers Day 2022)। সেটা ১৯৮১ সাল। এখন এই এলাকারই বাসিন্দা হয়ে গেছেন। ইতিহাসে অগাধ জ্ঞানের জন্য এখন তিনি স্কুলের ইতিহাসের স্যার। স্কুল জীবন শুরুর প্রথম থেকেই তাঁর লক্ষ্য ছিল ছাত্র-ছাত্রীদের আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার। আর তাই বহুবার অন্যান্য স্কুলে শিক্ষকতার সুযোগ আসলেও কোনদিন তিনি ডায়মন্ডহারবার হাইস্কুল ছেড়ে যাননি। স্কুলে ঢোকার কিছুদিনের মধ্যেই পড়ুয়াদের প্রিয় হয়ে ওঠেন দিলীপ বেরা স্যর। তিনি না এলে যেন ক্লাসে মন বসত না পড়ুয়াদের। তাঁরাই বলেছেন, স্যার বোঝালে যে কোনও কঠিন পড়াও সহজে বোঝা যায়।

চার বছরেও মেলেনি পেনশন, দু’বেলা খাবারই জোটে না ডায়মন্ড হারবার স্কুলের সুপ্রকাশ স্যারের

দিলীপ বেরা স্যার (Teachers Day 2022) আরও একটা কারণে ছাত্রছাত্রীদের আবেগের সঙ্গে জড়িয় গেছেন। দীর্ঘ ৬০ বছরের কর্মজীবনে বহু ছাত্রছাত্রীকেই বিনা বেতনে পড়িয়েছেন। এমন অনেকে রয়েছেন যাঁরা দিনের পর দিন বিনা বেতনেই মাস্টারমশাইয়ের কাছে পড়াশোনা করেছেন। নানা বিষয়ের সঙ্গে শরীরচর্চার দিকেও জোর দেন দিলীপ বেরা স্যর। স্কুলেও এই বিষয়টাতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। তাঁর কাছে অভ্যাস করে বহু ছাত্রছাত্রী ন্যাশনাল লেভেল অবধি খেলতে গেছেন। দীর্ঘদিন ডায়মন্ডহারবার মহকুমা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১৭ সালে অবসর নেন। কিন্তু এখনও ছাত্র পড়ানোও ইতি টানেননি। শিক্ষকদের কোনও অবসর হয় না, এটাই বিশ্বাস করেন মাস্টারমশাই। কোনও ছাত্রছাত্রী সমস্যা পড়েছে শুনলেই সাইকেল নিয়ে ছোটেন। ছাত্রছাত্রীদের এত আবেগ, ভালবাসা ফেলে কি যাওয়া যায়! তাই দিলীপ বেরা স্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যতদিন বাঁচবেন ছাত্র পড়িয়ে যাবেন। বিনা বেতনেই।

You might also like