
এদিন শুভেন্দু বলেন, “এটা সাড়ে তিনশ বা পাঁচশ জনের বিষয় নয়। গোটা রাজ্যে এমন ভুয়ো নিয়োগের সংখ্যা বিপুল। কোভিডের সময়ে মোবাইলে ডেকে ডেকে চাকরি দিয়েছে তৃণমূল। সিবিআই ছাড়া এই তদন্ত কেউ করতে পারবে না।”
এখানেই থামেননি নন্দীগ্রামের বিধায়ক। শুভেন্দু বলেন, “এই গোটা কর্মকাণ্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের মালিকরা যুক্ত, শিক্ষামন্ত্রী যুক্ত, তাঁর দফতরের গোটা ব্যবস্থাপনা যুক্ত।” শুভেন্দু আরও বলেন, বাংলায় অন্তত এক হাজার তৃণমূলের নেতা রয়েছেন যাঁদের পরিবারের জোড়া জোড়া আত্মীয়কে এই ভাবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে।
গ্রুপ সি নিয়োগ নিয়ে মামলাকারী কলকাতা হাই কোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, ৩৫০ জন কর্মীকে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ করা হয়েছিল। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলাকারীর থেকে ‘ভুয়ো’ নিয়োগের সমস্ত নথি অর্থাৎ যাঁদের অস্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের নাম-ঠিকানা-নিয়োগপত্র চেয়ে পাঠিয়েছিল আদালত। ওই রিপোর্টই বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে জমা পড়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই অবুলম্বে এই সাড়ে তিনশ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্ট যখন গ্রুপ ডি কেলেঙ্কারিতে সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল সেই সময়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, আমি এটা বলতে পারব না। এটা আমার সময়ে হয়নি। আবার তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে ব্রাত্যর এই দায় ঝেড়ে ফেলা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও চাপানউতর রয়েছে বলে খবর।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এদিন শিক্ষামন্ত্রী বলতে শুভেন্দু তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর কথাই বোঝাতে চেয়েছেন। যদিও সন্ধে পর্যন্ত শিক্ষা দফতর এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তা পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনে আপডেট করা হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারে আসার পর থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ ভুড়িভুড়ি। মামলার জটিলতাও কম নেই। গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় আদালত স্পষ্টই বলেছিল, এসএসসি দুর্নীতির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। সিঙ্গল বেঞ্চ সিবিআই তদন্ত দিলেও তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে। তাতে আপাতত তিন সপ্তাহের স্থগিতাদেশ রয়েছে। তবে বিরোধীদের বক্তব্য, গ্রুপ ডি বেরোতে না বেরোতেই আবার গ্রুপ সি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে এই সরকার কতটা অস্বচ্ছ।