
স্থানীয় বাসিন্দা মুরারীমোহন লাহা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে রেল প্রশাসনের কাছে এই পুরনো সেতু সংস্কারের জন্য আবেদন করা হলেও রেল কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এই সেতুর উপর সারাদিন প্রচুর ভারী যানবাহনের চাপ থাকে। ফলে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তা মারাত্মক আকার নেবে। তাই আমরা বহুদিন ধরে এই সেতু সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম।’’
নওয়াদার ঢাল স্টেশনের কাছে এই রেল সেতুর উপরের অংশ সম্পূর্ণভাবে ভেঙে সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করেন রেলের আধিকারিকরা। বৈঠকে রেলের আধিকারিকরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান উত্তরের মহকুমাশাসক পুষ্পেন্দু সরকার, আউশগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের বিডিও চিত্তজিৎ বসু, আউশগ্রাম ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন মাজি, এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান সহ পুলিশ আধিকারিকরা। সেতুর কাজ শুরুর জন্যে আগামী সপ্তাহ থেকেই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন রেলের আধিকারিকরা। সংস্কারের কাজের জন্য প্রায় ৪০ দিন ধরে এই সেতুতে বন্ধ থাকবে যান চলাচল। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হলে দুর্গাপুজোর আগেই সেতু খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় গুসকরা ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান সুবীর মণ্ডল জানান, সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত এই সেতু বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন রেলের আধিকারিকরা। ওই সেতু ভেঙে সংস্কারের কাজ শুরু হলে ২বি জাতীয় সড়কের ওড়গ্রাম থেকে নওয়াদা, আলিগ্রাম হয়ে দিগনগরের কেওতলা পর্যন্ত রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এতে মূলত আউশগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের গুসকরা ২ ও দিগনগর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের সমস্যা হবে। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার জন্য রেলের আধিকারিকদের কাছে অনুরোধ করেন তিনি। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘অক্টোবর মাসের শেষের দিক থেকেই এলাকায় ধানকাটা এবং রবিচাষের মরসুম শুরু হয়ে যায়। তাই ওই সময়েও যাতায়াত বন্ধ থাকলে এলাকাবাসীরা সমস্যায় পড়বেন। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য রেলের অফিসারদের অনুরোধ করেছি।’’
সেতু ভাঙা হলে যান চলাচলের নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন মোড়ে সতর্কতামূলক বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করার ব্যাপারেও সভায় আলোচনা হয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বছর খানেক আগে থেকেই এই সেতু সংস্কারের ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এবার কাজ শুরু হবে।’’