
বর্ধমানে রাস্তার হাল ফেরাতে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন পঞ্চায়েত সভাপতি
বর্ধমান-কাটোয়া রোড সংস্কারের জন্য জেলাশাসকের কাছে লিখিত আবেদন
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান-কাটোয়া রোডের বেহাল দশা নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন স্থানীয়রা। কিন্তু সুরাহা হয়নি। বর্ষার সময় রাস্তায় হাঁটু জল, আর বাকি সময়ে খানাখন্দ আর চোখ অন্ধকার করা ধুলো নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয় এলাকার মানুষদের। এবার রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে সরব হলেন খোদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। রাস্তা সংস্কারের জন্য লিখিতভাবে জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানালেন বর্ধমান ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ।
বর্ধমান স্টেশনের ওভারব্রিজ পেরিয়ে ডানদিকে এবং বাঁদিকে দু’টি রাস্তা চলে যাচ্ছে। একটি রাস্তা গেছে কালনা এবং অন্য রাস্তা গেছে কাটোয়া। কাটোয়ার দিকে যাওয়ার রাস্তাটির নাম বর্ধমান-কাটোয়া রোড। এই রাস্তা নবদ্বীপ থেকে শুরু করে মালদহ এমনকি উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। কলকাতা থেকে শিলিগুড়িগামী অনেক বাস বর্ধমান কাটোয়া রোডের উপর দিয়ে যাতায়াত করে।
কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা নিয়ে সমস্যার অন্ত নাই। বাজেপ্রতাপপুর মোড় থেকেই রাস্তার মাঝে মধ্যেই তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। সাবজোলাপুল, বিজয়রাম, হটুদেওয়ান, ভোতার পাড় একাধিক এলাকায় রাস্তাজুড়ে বড়বড় গর্ত। সব থেকে খারাপ অবস্থা বিজয়রাম এলাকায়। এখানে রাস্তায় প্রায় হাঁটু সমান গর্ত। সেই রাস্তার উপর দিয়ে যাতায়াত করছে বাস লরি, গাড়ি, টোটো। নেড়োদিঘি, হটুদেওয়ান এলাকা থেকে রাস্তার মাঝখানটা ঠিক থাকলেও দু’পাশ ভেঙে একাকার। ভোতার পাড়ে রাস্তার পিচ উঠে তৈরি হয়েছে বড়বড় গর্ত। বাজেপ্রতাপপুর থেকে দেওয়ানদিঘী পর্যন্ত রাস্তার এমন হাল।
শুধু খারাপ রাস্তাই নয়। রয়েছে আলোর সমস্যাও। রাতে এই রাস্তাটি অন্ধকারে ডুবে থাকে। ভরসা বলতে গাড়ির হেডলাইটের আলো এবং আশে পাশের দোকান থেকে আসা একটু আধটু আলো। কিন্তু সন্ধ্যার পর দোকানপাট আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে গেলে গোটা রাস্তা ডুবে যায় অন্ধকারে। তাই অন্ধকারেই যাতায়াত করতে হয় এলাকার মানুষকে।
এই খানাখন্দে ভরা অন্ধকার রাস্তা দিয়েই রোগী নিয়ে যেতে হয় অ্যাম্বুল্যান্সকেও। অন্ধকার থাকায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। এলাকার বাসিন্দা সনাতন দাস, সেখ রফিকুল বা তনুশ্রী রায়রা বলেন, “সারা বছরই খারাপ থাকে এই রাস্তা। যখন বড় বড় গর্ত হয় তখন গর্তে তাপ্পি দেওয়া হয়। তাপ্পি কিছুদিন থাকে। তারপর আবার আগের মতো হয়ে যায়। তখন রাস্তাজুড়ে চলে ধুলো ঝড়। রাস্তায় জল ছিটিয়ে ধুলো থেকে বাঁচার চেষ্টা করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।”
গত মাসের ১৭ তারিখ এই রাস্তা সংস্কারের আবেদন জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি লেখেন বর্ধমান ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ঝুমা মালিক। তিনি বলেন, “এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তার এমন হালের জন্য বছরভর ভুগতে হয় এলাকার মানুষকে। ভুগতে হয় এই রাস্তা ব্যবহারকারী অন্যদেরও। তাই দ্রুত এই রাস্তা সংস্কারের জন্য জেলাশাসকের কাছে আবেদন করেছি।”
এই চিঠি পাওয়ার পর ফেব্রুয়ারি মাসের চার তারিখ জেলা প্ল্যানিং অফিসার রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পূর্তদফতরকে জানায়। রাস্তা খারাপের কথা মেনে নিচ্ছেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকরাও। দফতরের আধিকারিক ভজন সরকার বলেন, “দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ না করায় তাঁকে ইতিমধ্যেই জরিমানা করা হয়েছে। দিনদুয়েকের মধ্যেই কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।”