
বিডিওর বদলি চেয়ে করণদিঘিতে একজোট পঞ্চায়েত সদস্যরা তালা দিলেন পঞ্চায়েত অফিসে
পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি স্যামুয়েল মার্ডি জানান, দীর্ঘদিন ধরেই করণদিঘির বিডিও তাঁদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করে নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তাই গোটা এলাকার উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। বিডিওর এই মনোভাবের বিরুদ্ধেই একসঙ্গে হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁরা। এরমধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।
অগস্ট মাসের ২৮ তারিখ থেকে তালা বন্ধ তৃণমুল কংগ্রস পরিচালিত করণদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির অফিস। তৃণমুল কংগ্রসের ১৯ জন সদস্যের মধ্যে ১৭ জন, বাম-কংগ্রেস জোটের ৪ জন এবং বিজেপির ১৫ জন সদস্য-সহ মোট ৩৬ জন পঞ্চায়েত সদস্য একসঙ্গে হয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে। পাশাপাশি ওই সদস্যরা করনদিঘি ব্লকের বিডিওর বিরুদ্ধে নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ জমা করলেন ইসলামপুরের মহকুমাশাসকের কাছে। তার প্রতিলিপি পাঠানো হয় জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনা, রায়গঞ্জ লোকসভার বিজেপি দলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, রাজ্যের মন্ত্রী ও গোয়ালপোখরের তৃণমুল বিধায়ক গোলাম রব্বানির কাছেও। অভিযোগ পত্রে সই করেছেন করনদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মহম্মদ কামরুজ্জামানও।
তবে তিনি এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি স্যামুয়েল মার্ডি জানান, দীর্ঘদিন ধরেই করণদিঘির বিডিও তাঁদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করে নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তাই গোটা এলাকার উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির সমস্ত সদস্য বিডিওর এই মনোভাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এরমধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। আমরা কেউই কোনও দলের ঝান্ডা ধরিনি। সবাই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পরিচয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়েছি।’’ একই বক্তব্য পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা বিজেপি দলের সদস্য সুভাষ সিংহের। তিনিও বলেন, ‘‘রাজনৈতিক অবস্থান ভুলেই আমরা উন্নয়নের প্রশ্নে একজোট হয়েছি।’’
পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের ১৯ জন সদস্যের মধ্যে সই করেননি দু’জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা তৃণমুল কংগ্রেসের জেলা সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান হাজি আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়েই আমি বিষয়টি দলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল অগ্রবালকে জানাই। সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়ছেন, সে কথাও জানাই। তিনি আমাকে অপেক্ষা করার নির্দেশ দেন। তাই অপেক্ষা করছি। তবে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি দলের সঙ্গে এক হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির দফতরে এভাবে তালা ঝোলানোয় তৃণমুলের রাজনৈতিক ক্ষতি হবে।’’
তৃণমুলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘আমাদের দলের সদস্যরা বিডিওর বদলি চেয়ে আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। আমি করণদিঘির বিধায়ক মনোদেব সিনহাকে বিষয়টি খোঁজ নিতে বলেছি।’’
করনদিঘির বিডিও বিজয় মোক্তান বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তালা মেরেছেন যাঁরা তাঁদের সঙ্গে আমি কথা বলার চেষ্টা করেছি৷ ওরা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ফাইনাল করবে বলেছে। তবে পঞ্চায়েত সমিতির অফিস বন্ধ থাকায় জনগনের পরিষেবার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। বিডিও অফিস খোলা আছে। কাজ চলছে।’’