
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হাওড়া: ফিরে এল পাখিরা। সাঁতরাগাছির ঝিলে এ বার পাখির ভিড়। শনিবার পাখি গণনার পর জানা গেছে, সাড়ে চার হাজার পাখি এসেছে এ বছর। গত দু’ বছরের তুলনায় যা অনেক অনেক বেশি। তবে বিদেশি পরিযায়ীর সংখ্যা হাতেগোনা বলে জানা গেছে। পরিবেশগত তারতম্যের কারণেই এমন ঘটনা বলে মনে করছেন পাখি বিশেষজ্ঞরা।
প্রতি শীতেই সাঁতরাগাছির ঝিলে ঢল নামতো পাখির। হাওড়ার মানুষ তো বটেই, পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকেও বহু মানুষ এখানে আসতেন পাখি দেখার জন্য। পর্যবেক্ষণের জন্য পাখি বিশেষজ্ঞদেরও শীতের ঠিকানা হত সাঁতরাগাছির ঝিল। কিন্ত গত কয়েকবছর ধরে দ্রুত হারে কমছিল পাখির সংখ্যা। ২০১৪ সালে প্রায় সাড়ে সাত হাজার পাখির ঝাঁক নেমেছিল এখানে। এই পাখির দলে সামিল ছিল সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা পাখিও। ২০১৮ সালে এই সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় আটশোতে।
পাখি বিশেষজ্ঞরা জানান, বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ঝিল পরিষ্কার না করার ফলে দূষণ বাড়ছিল ঝিলের জলে। আর তারই জেরে কমতে থাকে শীতকালে পাখি আসাও। এরপরেই কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হয় ঝিল সংস্কার। পাখিদের থাকার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি চেষ্টা সফল হওয়ার ফল মেলে হাতেনাতে। গত বছর এসেছিল প্রায় তিন হাজার পাখি। আর এ বছর সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে চার হাজারে।
শনিবার প্রকৃতি সংসদের সদস্যরা পাখি গণনা করেন। ছিলেন পাখিপ্রেমীরা। দূরবীন বায়নাকুলার দিয়ে পাখি দেখতে ভিড় জমান অনেকেই। লেন্সবন্দি করেন পরিযায়ীর দলকে। তবে বিদেশি পাখি সেভাবে না আসায় কিছুটা হলেও হতাশ পাখিপ্রেমীরা। সংস্থার সম্পাদক সৌম্য রায় সোমবার জানান, পাখির সংখ্যা বেড়েছে এটা ঠিক। তবে বিদেশি পাখির সংখ্যা কিন্তু এখনও খুব কম। সাড়ে চার হাজারের মধ্যে চার হাজার চারশোটি পাখিই হল লেসার হুইসলিং ডাক, যা সরাল নামে পরিচিত। এই পাখিগুলো এ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে সাঁতরাগাছির ঝিলে আসে। তিনি বলেন, “গারগেনি, পন্ড হেরন প্রজাতির যে পাখিগুলি এসেছে তার সংখ্যা এখনও হাতে গোনা।”
তিনি জানান, খাবারের জন্য এখনও কিন্তু সাঁতরাগাছির ঝিল থেকে আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন জলাশয়ে উড়ে যাচ্ছে পাখির দল। অর্থাৎ খাবারের অভাব রয়েছে এখানে। এই ব্যাপারটাও ভেবে দেখার মতো। কারণ গ্লোবাল ওয়ার্মিং- সহ পরিবেশগত বিভিন্ন তারতম্যের কারণে সাইবেরিয়ান বার্ড ও বিদেশি একাধিক পরিযায়ীর দেখা সে ভাবে মেলেনি।
তবে সাঁতরাগাছির ঝিলে এ বার পাখির ঢল দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত এলাকার মানুষ।