Latest News

ঢিমেতালে চলছে সেতু মেরামতি, ঘুরপথে যাতায়াতে পকেট ফাঁকা হচ্ছে ক্যানিং এর বাসিন্দাদের

ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল অবশ্য বলেন “করোনা আর উমফানের দাপটে সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন। চরম বিপদের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। আয় নেই। তারপর অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সাতমুখী সেতু দিয়ে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে যাতে যানবাহন চলাচল করতে পারে তার জন্য দ্রুত কাজ শেষ করতে বলেছি।”

দ্য ওয়াল ব্যুরো, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সেতু মেরামতির কাজ চলছে শম্বুক গতিতে। আর তারই জেরে ১৩ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে খরচ লাগছে ৮০ টাকা!

কলকাতা থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে ক্যানিং থেকে হেড়োভাঙ্গা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার রাস্তা। এই রাস্তার উপর সাতমুখী এলাকায় একটি সেতুর সংস্কারের কাজ চলায় বর্তমানে সেতুতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাস না চলায় অটো ও ছোট গাড়িতে এই পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে এলাকার সাধারণ মানুষকে। আর এখানে সুযোগ নিচ্ছে ক্যানিং-হেড়োভাঙ্গা রোডের অটোচালকরা। ক্যানিং-সাতমুখী ছ’ কিলোমিটার রাস্তায় অটো ভাড়া ২০ টাকা এবং সাতমূখী-হেড়োভাঙ্গা ৭ কিলোমিটারে ভাড়া করা হয়েছে আরও ২০ টাকা। সর্বসাকুল্যে ১৩ কিলোমিটার রাস্তা যাতায়াত করতে একজন মানুষকে ৮০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। করোনার আগে ক্যানিং-হেড়োভাঙা রোডে যাতায়াত ভাড়া ছিল ৩৪ টাকা। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে স্বল্প সংখ্যক যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করার কথা অটোগুলির। সেই কারণ দেখিয়ে  একলাফে ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণ। কিন্তু বাস্তবে বিধি শিকেয় তুলে বাড়তি ভাড়া নিয়ে এক একটি যাত্রীবাহী অটো ছ’ সাতজন যাত্রী নিয়ে অবাধে যাতায়াত করছে।

সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম সমস্যায় পড়ে যাওয়া এলাকার মানুষ জানান, হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিপদ বাড়ে আরও। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য অতিরিক্ত ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হচ্ছে। এরজন্য খরচ করতে হচ্ছে দ্বিগুণ টাকা। বর্ষার মরসুমে বেড়েছে সাপের উৎপাত। হামেশাই সাপের ছোবলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মানুষ। তাঁদের হাসপাতালে আনতে নাকাল হচ্ছেন পরিবারের লোক। ভোগান্তি বেড়েছে প্রসূতিদের নিয়েও।

সুন্দরবনের সিংহদুয়ার অথবা প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাতি ক্যানিং শহরের। ক্যানিং শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হেড়োভাঙ্গা। এখানকার সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য ছয়ের দশকে এই রাস্তাটি তৈরি করেছিলেন তৎকালীন ক্যানিংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুর শুক্কুর সাহেব। রাস্তাটির নামকরণ হয় শুক্কুর সাহেব রোড নামে। প্রথম দিকে টেম্পূগাড়ি, টেম্পো, লরি চলাচল করতো। পরে শুরু হয় বাস, ম্যাজিক, অটো, টোটো সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল। শুক্কুর সাহেব রোডের নাম পরিবর্তন হয়ে এখন এই রাস্তা পরিচিত ক্যানিং-হেড়োভাঙা রোড নামে।

এই রোডের উপর সাতমুখী ব্রিজটি যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে যাওয়ায় তা সংস্কারের জন্য ৩৫ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু সেই কাজ খুবই ঢিমেতালে চলায় সাধারণ মানুষ গভীর সমস্যায়। কবে এই সেতু সংস্কারের কাজ শেষ হবে? কবেই বা যান চলাচল স্বাভাবিক হবে? সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তাঁরা।

ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল অবশ্য বলেন “করোনা আর উমফানের দাপটে সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন। চরম বিপদের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। আয় নেই। তারপর অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সাতমুখী সেতু দিয়ে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে যাতে যানবাহন চলাচল করতে পারে তার জন্য দ্রুত কাজ শেষ করতে বলেছি।”

You might also like