
কুর্মিদের ডাকা হুড়কা জামে অবরুদ্ধ জঙ্গলমহল, যানবাহন চলাচলে বাধা, বন্ধ দোকান
কুর্মি সমাজের অভিযোগ, স্বাধীনতার আগে তাঁরা তফশিলি জাতিভুক্ত ছিলেন ৷ কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে কোনও অজ্ঞাত কারণে হঠাৎই ওই তালিকা থেকে এই সম্প্রদায়ের নাম বাদ দেওয়া হয় ৷ ফলে অনগ্রসর শ্রেণি হলেও শুধুমাত্র সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত না হওয়ার কারণে সমস্ত ধরণের সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে ৷
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কুর্মিদের ডাকা হুড়কা জাম কর্মসূচিতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল জঙ্গলমহল। ২৬ দফা দাবিকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া মেদিনীপুর এই চার জেলায় বনধ ঘোষণা করা হয়। আর তারই জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই জেলার নানাপ্রান্তে শুরু হয় রাস্তা অবরোধ। এর জেরে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বেশ কিছু জায়গায় বন্ধ রয়েছে বাজার ও দোকানপাট।
বৃহস্পতিবার সকালেই কুর্মি সমন্বয় মঞ্চের পক্ষ থেকে ঝাড়গ্রাম জেলার কলেজ মোড়ে পথ অবরোধ করা হয়, পরে সকাল আটটা নাগাদ মানিকপাড়া বিবেকানন্দ মোড়, এবং সকাল ন’টা নাগাদ গুপ্ত মনিতে ছ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয় এর ফলে ওই রাস্তায় সারিবদ্ধ ভাবে গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়, অবরুদ্ধ হয়ে যায় গোটা ছয় নম্বর জাতীয় সড়ক। শুধু রাস্তাঘাট অবরোধ নয় ঝাড়গ্রাম জেলার সবজি বাজার এবং মানিকপাড়া রামকৃষ্ণ বাজার ও বন্ধ রাখা হয়। এর ফলে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয়।
বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম ন’নম্বর রাজ্য সড়কের উপর সিমলাপালের হরিণটুলিতে পথ অবরোধ শুরু করেন ওই সংগঠনের কর্মীরা। ফলে আটকে পড়ে অসংখ্য যাত্রীবাহী যানবাহন। সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ।
কুর্মি সমাজের অভিযোগ, স্বাধীনতার আগে তাঁরা তফশিলি জাতিভুক্ত ছিলেন ৷ কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে কোনও অজ্ঞাত কারণে হঠাৎই ওই তালিকা থেকে এই সম্প্রদায়ের নাম বাদ দেওয়া হয় ৷ ফলে অনগ্রসর শ্রেণি হলেও শুধুমাত্র সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত না হওয়ার কারণে সমস্ত ধরণের সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে ৷ কুর্মি সমাজের রাজ্য কমিটির সদস্য উত্তমকুমার মাহাতো, বাঁকুড়া জেলা কমিটির সদস্য চিরঞ্জিত মাহাতোরা বলেন, ‘‘সরকারের কাছে বারবার আমাদের ফের তফশিলি জাতিভুক্ত করার আবেদন করা হয়েছে ৷ কিন্তু কোনওরকম আবেদন নিবেদনে কাজ হয়নি ৷ তাই আমরা এবার সংগঠনগতভাবে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷’’
১৯৩১ সালের জনগণনা পর্যন্ত এই কুর্মি সম্প্রদায় তফশিলি জাতিভুক্ত ছিল ৷ ১৯৫১ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত বেশ কিছু জাতিকে তফশিলি জাতির আওতায় নিয়ে আনা হলেও কুর্মি সম্প্রদায় বাদ পড়ে যায় ৷ এই সম্প্রদায়ের মানুষ এ বিষয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করলেও কোনও কাজ হয়নি ৷