
শরীরের মতোই ভেঙেছে পুতুলের বাক্স, উত্তরসূরির অপেক্ষায় দিন কাটে ইটাহারের চদর বদর শিল্পী ডমন মুর্মুর
একসময় গলায় গান আর পুতুলনাচের বাক্স নিয়ে চলে যেতেন দূর থেকে দূরান্তরে। কিন্তু বয়সের ভারে এখন ন্যুব্জ হয়েছে শরীর। পুতুলগুলি হাত বাড়িয়ে ডাকলেও সাড়া দিতে পারেন না আর। তাহলে কি আর নাচবে না পুতুলগুলি? এই চিন্তাই এখন কুড়ে কুড়ে খায় ডমন মুর্মুকে।
লোকশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে পুতুলনাচ বাংলার সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে বহু বছর ধরে। কিন্তু এই পুতুলনাচের একাধিক ঘরানাই আজ লুপ্তপ্রায়। তেমনই একটি চদর বদর। সাঁওতালি সংস্কৃতির অঙ্গ এই পুতুলনাচে একটি কাঠের স্ট্যান্ডের উপরে বসানো হয় বাঁশের তৈরি বাক্স। যার তিন দিক ঢাকা থাকে চাদর দিয়ে। ভিতরের একটি পাটাতনের উপর দাঁড় করানো থাকে সারি বাঁধা পুতুল। একধারে পুরুষ। অন্যধারে মহিলারা। সাঁওতালি নৃত্যদল যেমন হয়। পাটাতনের নীচে চাদরে ঢাকা লিভারকে আঙুলে প্যাঁচানো সুতোর সাহায্যে চালনা করেন শিল্পী। তখনই নেচে ওঠে পুতুলগুলি।
মঞ্চ ঘিরে চাদরের বাঁধন। তাই হয়তো চাদর বাঁধনি নামেই এই পুতুলনাচের পরিচিতি। লোকমুখে যা চদর বদর। আরও অনেক কিছুর মতো আধুনিকতা গ্রাস করেছে তাঁকে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বিচ্ছিন্ন কিছু মানুষ এখনও ভালবেসে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন এই ধারাকে। তাঁদেরই একজন ইটাহারের ডমন মুর্মু। একসময় গলায় গান আর পুতুলনাচের বাক্স নিয়ে চলে যেতেন দূর থেকে দূরান্তরে। লোকশিক্ষা আর বিনোদন পূরণ হত দুই লক্ষ্যই। কিন্তু বয়সের ভারে এখন ন্যুব্জ হয়েছে শরীর। পুতুলগুলি হাত বাড়িয়ে ডাকলেও সাড়া দিতে পারেন না আর। তাহলে কি আর নাচবে না পুতুলগুলি? এই চিন্তাই এখন কুড়ে কুড়ে খায় ডমন মুর্মুকে।