
ভোট পরবর্তী হিংসা: রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন, কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে পিটিশন, শুনতে রাজি হল সুপ্রিম কোর্ট
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেন্দ্রকে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির নির্দেশ দেওয়া হোক, এমনই আবেদন জানিয়ে পিটিশন পেশ হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী হিংসার জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে সওয়াল করেছেন জনস্বার্থ আবেদনকারীরা। পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনকে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোয়, অভ্যন্তরীণ গোলযোগ থেকে রাজ্যকে রক্ষা করায় সাহায্য করতে কেন্দ্রকে সশস্ত্র বা আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশের আর্জিও পেশ করা হয়েছে পিটিশনে। সেটি শুনতে সম্মত হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রথম। ২ মে ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে জেলায় জেলায় বিরোধীদের ওপর শাসক দলের কর্মীদের নির্যাতন, এমনকী ধর্ষণ সহ মহিলাঘটিত অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। ভোটের আগে যারা বিজেপিতে গিয়েছিল, এখন তারাই অত্যাচারের ভয়ে নাকি চাপে পড়ে ভুল হয়েছিল বলে মুচলেকা দিয়ে তৃণমূলে ফিরছে। এর আগেও অনেকবার তৃণমূল জমানায় সুপ্রিম কোর্টে এমন পিটিশন জমা পড়েছে। কিন্তু শীর্ষ আদালত শুনতে রাজি হয়নি। বলেছে, এটা কেন্দ্র, সংসদের দেখার বিষয়।
পাশাপাশি পিটিশনে রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার কারণগুলি খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ তদন্ত দল গঠনের আবেদনও করা হয়েছে। বিচারপতি বিনিত সরন, বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরীর বেঞ্চ পিটিশনারের যাবতীয় আর্জি শুনতে সম্মত হওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ভারতের নির্বাচন কমিশনকেও নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সভানেত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস দেয়নি বেঞ্চ।
দুই পিটিশনার উত্তরপ্রদেশের আইনজীবী রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী ও সমাজকর্মী জিতেন্দ্র সিংয়ের হয়ে শীর্ষ আদালতে অ্যাডভোকেট হরিশঙ্কর জৈন জানান, রাজ্যে নির্বাচনী ফল বেরনোর পর থেকে ঘটে চলা হিংসার বিরুদ্ধেই তাঁদের আবেদন। পিটিশনে আরও বলা হয়েছে, ভোটের ফল বেরনোর পর কী ধরনের হিংসা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন, তাদের পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দিক কেন্দ্র ও রাজ্য।
পিটিশনে বলা হয়েছে, রাজ্যে শাসক দলের লোকজন বিজেপিকে বিধানসভা ভোটে সমর্থন করায় হাজার হাজার লোকজনকে ভীত, সন্ত্রস্ত করে রেখেছে, জরিমানা আদায় করছে, অত্যাচার চালাচ্ছে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলছে। পিটিশনাররা পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার মানুষের হয়ে সওয়াল করছেন, যারা ভোটে বিজেপিকে সমর্থন করায় সাম্প্রদায়িক হিংসার বলি হয়েছেন। আদালত কেন্দ্রকে সংবিধানের ৩৫৫ ও ৩৫৬ ধারায় ন্যস্ত ক্ষমতা প্রয়োগের নির্দেশ দিক, কেননা ভারতের সার্বভৌমত্ব, সংহতির সামনে বিপদ এসেছে। বিরোধী কর্মীরা শাসক দলের নির্যাতনের শিকার হলেও রাজ্য সরকার, প্রশাসন নীরব দর্শক। সরকার, প্রশাসন, পুলিশ শাসক দলকে আড়াল করছে।
গোটা ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন পিটিশনাররা। বলা হয়েছে, রাজ্যে বেআইনি বাংলাদেশি অভিবাসী ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের জেরে, তারা ভোটার হিসাবে নাম তোলায় মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ। প্রায় ১০০টি কেন্দ্রে তারাই প্রার্থীদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে।