
দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্কুল তাদেরও বন্ধ। অনলাইনেই ক্লাস চলছে, তাই বাবার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে সরস্বতী গড়ে চলেছে দুই কিশোরী, ঊর্মি আর সূর্মি। বালুরঘাট শহরের চকভৃগু এলাকায় বাড়ি লাগোয়া স্টুডিও তাদের। প্রতিমা কেনার জন্য পালেদের কারখানা খুঁজে যখন পৌঁছে যাচ্ছে স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা তখনই এই দৃশ্য তাদের তাজ্জব করছে।
যেন সাক্ষাৎ দুই সরস্বতীর হাতেই নিশ্চিন্তে সাজগোজ করছেন মাটির প্রতিমারা। মৃৎশিল্পী উত্তম পালও মেয়েদের ওপরই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। আগামীর মুখ যে ওরাই, যেভাবে ছোট থেকে কাজ শিখেছে প্রতিমা নির্মাণের ব্যবসাও বাবার অবর্তমানে মেয়েরাই দেখবে বলে জানান শিল্পী।
কন্যাশ্রী প্রকল্পের অর্থ থেকেই দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ উঠে আসে। করোনা আবহে ক্লাস বাড়ি থেকে হওয়ায় এখন পুরোদমে প্রতিমা তৈরি করে চলেছে ঊর্মি আর সুর্মি। পুজোর মরশুমে বাবার ওপর বছর বছর বিপুল চাপ যায়, সেই বোঝা কমাতেই এখন দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে দুই বোন।
উর্মি জানান, তিনি মূলত প্রতিমার রঙের কাজ ও সাজসজ্জার যাবতীয় খুঁটিনাটি একা হাতে সামলান। যদিও মূর্তি গড়তেও পটু দুই বোনে।
করোনা পরিস্থিতিতে গত দু’বছর ধরেই মৃৎশিল্পীদের অবস্থা শোচনীয়। একে মূর্তির বরাত নেই, তার ওপর যাও বা কাজ পান তার যথাযথ দাম পান না।
যদিও মেয়েরা পাশে থাকায় বাবা এখন অনেকটাই স্বস্তিতে। ছেলে নেই তো কী হয়েছে, তাঁর মূর্তি তৈরির পরম্পরা এগিয়ে নিয়ে যাবে বাড়ির সরস্বতীরাই।