
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেন্দ্র দীর্ঘদিন আগে পরিকল্পনা করলেও পশ্চিমবঙ্গ এত দিন ‘এক দেশ, এক রেশন’ (One Nation One Ration Card) ব্যবস্থার প্রস্তাবে সায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নবান্নে জানান, এ রাজ্যে রেশনের ক্ষেত্রে এই পরিকল্পনা বলবৎ করবে। পরিযারী শ্রমিকদের স্বার্থেই ‘এক দেশ, এক রেশন’ কর্মসূচী চালু হয়েছে। রাজ্য খাদ্য দফতর জানিয়েছে, এক দেশ এক রেশন কার্ডের আওতায় ভিন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদেরও এ রাজ্যে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হবে।
রাজ্য খাদ্য দফতরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, অন্য রাজ্য থেকে পরিযায়ীরা এ রাজ্যে এলে তাদেরও বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করবে সরকার। কর্মসূত্রে পরিবার থেকে দূরে থাকা ব্যক্তিরা ভারতের যে কোনও জায়গা থেকে বাংলায় এলে রেশন সংগ্রহ করতে পারবেন। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে, দেশের যে কোনও প্রান্তে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা রেশন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে না। অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করা শ্রমিক এবং পরিযায়ী শ্রমিকদেরর নাম যাতে দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সে কাজও শুরু করা হবে দ্রুতই।
গত বছর জানুয়ারি থেকে দেশের ১২টি রাজ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক দেশ এক রেশন কার্ডের তত্ত্ব মেনে অভিন্ন রেশন ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই অভিন্ন রেশন কার্ডের বিরোধিতা করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বরং রাজ্য যে পুরনো রেশন ব্যবস্থার উপরেই আস্থা রাখছে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, গত বছর জানুয়ারি থেকে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ ব্যবস্থা চালু হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, রাজস্থান, কর্নাটক, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, ঝাড়খণ্ড ও ত্রিপুরায়। কেন্দ্রের বক্তব্য, এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন শ্রমিকরা। কারণ, কাজের জন্য তাঁদের একাধিক রাজ্যে গিয়ে থাকতে হয়। সেখানে রেশন পান না তাঁরা। এই কার্ড সঙ্গে থাকলে দেশের যেকোনও প্রান্ত থেকে রেশন সংগ্রহ করতে পারবেন তাঁরা। সে কারণেই গত এক বছর ধরে রেশন কার্ড ডিজিটাল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ‘এক দেশ এক রেশন’ পরিষেবা গোটা দেশে চালু হয়ে গেলে সব নথি অনলাইনে থাকবে। দেশের কোন প্রান্ত কত পরিমাণ রেশন যাচ্ছে তার উপরেও নজর রাখতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। রেশনে চুরির ঘটনাও কমবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা ভেবেই কেন্দ্রীয় সরকারের অভিন্ন রেশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে বাংলাতেও। এই ব্যাপারে কোনও রকম সমস্যা দেখানো যাবে না। কোনও অজুহাতও শুনবে না আদালত। সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি, এই ব্যবস্থা চালু হলে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।