
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পশ্চিম বর্ধমান: উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করায় কয়েক জন বন্ধুর ইচ্ছে ছিল শিবের মাথায় জল ঢেলে মানসিক পূর্ণ করবেন। কিন্তু সেই ইচ্ছা আর পূরণ হল না। পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডালের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের কুঠিডাঙা লাগোয়া দামোদরে নদীতে নামতে না নামতেই সোমবার ভোরে তলিয়ে যান চার কিশোর।
জানা গেছে তাঁদের চার জনেরই বাড়ি গোপালমাঠ এলাকায়। সেখানে একটি শিবমন্দির রয়েছে। সেখানে শিবের মাথায় জল ঢালবেন বলে দামোদর নদের ধারে হাজির হন এবছরে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা বছর উনিশের সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়, সৌরভ মণ্ডল ও শিবু দাস। তাঁদের সঙ্গেই জলে নামেন উচ্চ মাধ্যমিক পাঠরত রাহুল মাণ্ডি। তাঁর বয়স বছর আঠেরো। দামোদরে পাড়ে অপেক্ষা করছিলেন তাঁদের অপর দুই বন্ধু গৌরব মণ্ডল ও ইন্দ্রনীল মণ্ডল। কথা ছিল স্নান করে ঘটে জল নিয়ে তাঁরা মন্দিরে যাবেন। শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলোয় শিবের মন্দিরে বেশি ভিড় হয়।
নদীতে স্নান করে নেমে এক জন ভারসাম্য হারিয়ে তলিয়ে যেতে শুরু করেন। তখন নন্য এক বন্ধু তাঁকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে যান। তার পরে তাঁদের দু’জনকে উদ্ধার এগিয়ে যান অন্য দু’জন। তাঁরা চার জনই তলিয়ে যাচ্ছেন দেখে পাড়ে থাকা দুই বন্ধু ভয় পেয়ে পালিয়ে যান। তাঁরা ওই কাছে কুঠিডাঙা গ্রামে পৌঁছে দুই বন্ধুর তাদের পরিবারের লোকজনকে ঘটনার কথা জানান। অন্য বন্ধুদেরও তাঁরা সে কথা জানান। খব0র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামের বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেয়। তাঁরা নিজেরই তল্লাশি শুরু করেন। খবর পেয়ে সকাল ছ’টা নাগাদ ঘটনাস্থলে আসে অণ্ডাল থানার পুলিশ। তখনও দামোদর নদের ওই ঘাটের কাছে পড়ে রয়েছে তলিয়ে যাওয়া চার যুবকের গামছা, চপ্পল ও জলের ঘট।
গ্রামের লকজনই প্রাথমিক ভাবে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে টানা চেষ্টা করার পরেও তলিয়ে যাওয়া চার যুবকের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তখন ডুবুরি এনে তল্লাশি করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। খবর দেওয়া হয় আসানসোলের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে। সেখান থেকে আসে ডুবুরি ও বিশেষ নৌকা। শুরু হয় তল্লাশি। পুরো গ্রাম ভেঙে পড়ে নদীর ধারে। ঘটনাস্থলের কাছ থেকেই উদ্ধার হয় দু’জনের দেহ।
উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরের দেহ পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।