
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরেও কোনও লাভ হয়নি। এই অভিযোগ তুলে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে রাস্তার উপরে ধান রোপন করে প্রতিবাদ জানালেন গ্রামবাসীরা।
প্রতিটি ভোটের আগে প্রচারে এসে বিভিন্ন দলের লোকজন প্রতিশ্রুতি দেন এই রাস্তা পাকা করার। তবে ওই পর্যন্তই। গলসি ২ নম্বর ব্লকের মসজিদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুলুমগড়িয়া গ্রামটি এলাকায় আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম নামেই পরিচিত। গ্রামবাসীরা জানান, হাট থেকে বাজার, স্কুল, হাসপাতাল যে কোনও জায়গায় যাওয়ার জন্যই তাঁদের এই একটিমাত্র রাস্তা কিন্তু সেই রাস্তা এখন চলাচলের অযোগ্য।
প্রায় দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। ভরা বর্ষায় সেই রাস্তা এখন কাদায় ভর্তি। এই খানাখন্দে ভরা মাটির রাস্তা দিয়ে নিত্য যাতায়াত করতে হয় গ্রামের বাসিন্দাদের। এখন বৃষ্টির ফলে যেমন কাদা জমেছে তেমন গরম কাল ও শীত কালে রোদ উঠলে ধুলো ওড়ে। ধুলো-কাদা এই গ্রামের মানুষের নিত্যসঙ্গী। বর্ষাকালে অবশ্য সমস্যা একটু বেশিই হয়। শহরে যেতে হলে সাইকেল কাঁধে নিয়ে চলাচল করতে হয় এই পথ। পাশের গ্রাম পরশুড়া থেকে বাজারের দূরত্ব মোটামুটি আট কিমি। রোগী হোক বা প্রসূতি – তাঁদের নিয়ে যাওয়ার উপায় একটাই। খাটে করে পাশের গ্রাম পুরশুড়াতে নিয়ে যেতে হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে চাপাতে হয়। একটু বৃষ্টিতে রাস্তার উপর দিয়ে বয়ে যায় জল। একমাত্র যাতাযাতের রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল থাকায় গ্রামবাসীরা আর হতাশা চেপে রাখতে পারেননি। এবার এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে রাস্তায় ধান রোপন করে তাঁরা প্রতিবাদ জানালেন।
এ ব্যাপারে গলসি ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাসুদেব চৌধুরী বলেন, “খুব তাড়াতাড়ি ওই মাটির রাস্তায় মোরাম দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ইতিমধ্যেই তার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে আইএসজিপি (ইনস্টিটিউশনাল স্ট্রেংথেনিং অফ গ্রাম পঞ্চায়েতস) সেলে পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলেই কাজ শুরু করা হবে।”
এই রাস্তাটি বামফ্রন্ট সরকারে আমলে তৈরি করা হয়েছিল। তারপরে গত নয় বছর ধরে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার চালাচ্ছে কিন্তু এই রাস্তার কোনও উন্নতি হয়নি। দীর্ঘদিন রাস্তায় কোনও রকম সংস্কার করা হয়নি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গত দশ বছরের মধ্যে এই রাস্তায় এক ঝুড়ি মাটিও পড়েনি। তাঁরা পঞ্চায়েত থেকে বিডিও অফিস – সর্বত্র তদারকি করলেও কোনও লাভ হয়নি।