
বসিরহাট মহকুমায় ঘুর্ণীঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত ১৪৯টা নদীবাঁধ অস্থায়ী ভাবে মেরামতির কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তা শেষ হবে আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে। তবে এই অঞ্চলের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেচমন্ত্রী। সুন্দরবনে অনেক বেশি সংখ্যায় লবনাম্বু উদ্ভিদ (ম্যানগ্রোভ) লাগানোর প্রয়োজন আছে বলেও তিনি এদিন জানিয়েছেন। আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন সুন্দরবনে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভের চারা লাগানো হবে।
পূর্ণিমার ভরা কোটাল শুরু হয়ে গেছে। তা ঘণ্টা খানেকের বেশি স্থায়ী না হলেও তাতেই বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। এখানে বিভিন্ন জায়গায় উমফানের তাণ্ডবে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সেই আশঙ্কা রয়েছে। এই অঞ্চলের মানুষ কী ভাবে প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছে সেকথা এদিন বলেন সেচমন্ত্রী। সুন্দরবনকে বাঁচানোর জন্যই ম্যানগ্রোভ লাগানো দরকার বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “আমাদের দলের ক্যাপ্টেন তথা প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুর্গত এলাকা আকাশপথে পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন ও এনিয়ে বৈঠক করেছেন। ইতিমধ্যেই তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কুড়ি হাজার টাকা করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।”
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঝড়ে বারবারই দেশের উপকূলবর্তী এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উমফান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি যেখানে থাকি সেই দীঘায় এই ঝড় আছড়ে পড়ে। তারপরে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাণ্ডব চালায়। আমাদের লড়াইটা প্রকৃতির সঙ্গে। তাই বাংলাকে স্বাভাবিক করতে যা প্রয়োজন সেই মতো লড়াই আমরা করে যাচ্ছি। উমফানের পরে পনেরো দিন কেটে গেছে। এখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। আপনারা তো জানেন একদিকে করোনা অন্যদিকে উমফানে বিপর্যস্ত বাংলা। আমাদের জিততে হবে। মাথার উপরে দলনেত্রী রয়েছেন।”
বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি ব্লকের সরবেড়িয়া ফুটবল মাঠে হেলিকপ্টার থেকে নামেন রাজ্যের জল পরিবহণ ও সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেখান থেকে গাড়িতে তিনি যান ধামাখালি। ধামাখালি থেকে লঞ্চে করে ক্ষতিগ্রস্ত ছোট কলাগাছি, বড় কলাগাছি, তুষখালি, রায়মঙ্গল প্রভৃতি দশটি নদীবাঁধে কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। দুর্গতদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাত, সরবেড়িয়া আগারহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ শাহাজান, জেলা পরিষদের সদস্য শিবপ্রসাদ হাজরা এবং সেচ দফতরের কয়েক জন আধিকারিক ও প্রশাসনিক কর্তারা।