
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিটফান্ড মামলায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের হলফনামার জবাব দিতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আরও সাত দিন সময় চাইল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির সেই দাবি মেনে নিয়ে ওই মামলার শুনানি আরও সাত দিন পিছিয়ে দিল প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
রাজীব কুমার ও চিটফান্ড তদন্তে রাজ্য সরকারের গঠন করা স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং টিমের অন্য সদস্যদের হেফাজতে নেওয়ার ব্যাপারে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। তার পর আদালত রাজ্য সরকার তথা রাজীব কুমারকে জবাব দেওয়ার জন্য সাত দিন সময় চেয়েছিল। গত শনিবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করে তাঁর বক্তব্য জানান রাজীব কুমার। সেই সঙ্গে আদালতে আর্জি জানান, শিলংয়ে তাঁকে সিবিআই পাঁচ দিন ধরে যে জেরা করেছিল তা ভিডিও সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা হোক।
রাজীব কুমারের ওই হলফনামা দেখে সিবিআই জবাব দিতে সাত দিন সময় চেয়েছে। আদালত সিবিআইয়ের আর্জি মঞ্জুর করে সোমবার জানিয়েছে, ২২ এপ্রিল ফের এই মামলার শুনানি হবে।
সারদা মামলায় রাজ্য সরকার যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করেছিল, তার মাথায় ছিলেন তৎকালীন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। সিবিআই-এর অভিযোগ, বহু নথি লোপাট হয়ে গিয়েছে। ফোনের কল রেকর্ড বিকৃত করে দেওয়া হয়েছে সিবিআই-এর হাতে। অতীতে চিটফান্ড মামলায় সিবিআই বারবার আদালতে ‘লার্জার কনস্পিরেসি’র কথা উল্লেখ করেছে। তাদের দাবি, এই জাল অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। তা ছাড়া সুনির্দিষ্ট ভাবে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অভিযোগ, শিলংয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় অধিকাংশ প্রশ্নেরই জবাবই রাজীব কুমার এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি সহযোগিতা করেননি।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার রাস্তায় কলকাতা পুলিশের সঙ্গে খণ্ড যুদ্ধ বেধে গিয়েছিল সিবিআই আধিকারিকদের। রাজীব কুমারের লাউডন স্ট্রিটের বাংলোয় তাঁকে জেরা করতে গেলে সিবিআই আধিকারিকদের আটকে দেয় কলকাতা পুলিশ। তারপর সিবিআই অফিসারদের টেনে হিঁচড়ে শেক্সপিয়র সরণি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে পৌঁছে যান রাজীবের বাড়িতে। এর পর ‘ফোর্সকে প্রোটেক্ট করতে’ ধর্নায় বসেন দিদি।
ওই ঘটনার অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু মুশকিল হল, লোকসভা ভোট এখন মধ্য গগনে। ২২ এপ্রিল এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে। তার পর দিনই বাংলায় তৃতীয় দফায় ভোট। ফলে তৃণমূল তথা রাজ্য সরকার চাইছে, আদালত যদি কোনও নির্দেশও দেয় তা যেন ভোটের পরেই ঘটে। কিন্তু সে তো ইচ্ছা মাত্র। এখন দেখার আদালত কী নির্দেশ দেয়।