
দলের সাংগঠনিক বৈঠক হবে, এ খবর কেবল বিজ্ঞপ্তি মাত্র। মূল কৌতূহলের বিষয় হল, ওই বৈঠকে কী হবে?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংগঠনিক বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা নিয়ে অতিশয় গোপনীয়তা থাকে। দিদি আগাম কাউকে জানতে বা বুঝতে দেন না। তবে কি, এ ধরনের বিষয় নিয়ে দলের সর্বোচ্চ স্তরে তিনি যখন এক জন বা দুজনের সঙ্গে আলোচনা করেন, তখন কিছুটা ইঙ্গিত চুঁইয়ে বেরিয়েই আসে। তা ছাড়া এ ব্যাপারে দলের মধ্যে জল্পনা ও আলোচনাও চলে।
এবং এ বারের আলোচনা হল, তৃণমূলের সংগঠনে এক ব্যক্তি এক পদ ফর্মুলার প্রথম প্রয়োগ করা হতে পারে। তা হয়তো, সর্বৈব ভাবে হবে না। তবে দলের সাংগঠনিক কাঠামোর একটি স্তর পর্যন্ত সেই ফর্মুলা প্রয়োগ করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি সূত্রের মতে, সে ব্যাপারে যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও আর্জি বা চাপ রয়েছে দিদির উপর।
তৃণমূলে এক ব্যক্তি এক পদ নিয়ে আলোচনা নতুন নয়। ষোল সালে ভোটের পরও তা নিয়ে চর্চা হয়েছিল। কিন্তু পরে দেখা যায়, বহু নেতা একাধিক দফতরের মন্ত্রী, কোনও উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান, দলের সাধারণ সম্পাদক, বহু জেলার সাংগঠনিক পর্যবেক্ষক ইত্যাদি ইত্যাদি। পরে ভোটের আগে পর্যবেক্ষক পদ তুলে দেওয়া হয়।
কিন্তু এখন দল বড় হচ্ছে। তৃণমূলের একাধিক নেতার মতে, সবাইকে তো রাজ্য বা জেলা স্তরে প্রশাসনিক পদে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এক ব্যক্তি এক পদ নীতি বাস্তবায়িত করা কার্যকরী হতে পারে।
এখন প্রশ্ন হল, পার্থ চট্টোপাধ্যায় তো শিল্প ও পরিষদীয় মন্ত্রী। সেই সঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিবও বটে। কিংবা ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসরা মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি দলের সাধারণ সম্পাদক। তাঁদের কি সাংগঠনিক পদ চলে যাবে?
অনেকের মতে, তা হয়তো হবে না। তবে যে সব জেলা সভাপতি মন্ত্রিসভাতেও রয়েছেন তাঁদের সাংগঠনিক পদ চলে যেতে পারে। যেমন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে রয়েছেন। স্বপন দেবনাথ মন্ত্রিসভায় রয়েছেন আবার বর্ধমানের জেলা সভাপতিও বটে। হাওড়া গ্রামীণের জেলা সভাপতি পুলক রায় মন্ত্রী হয়েছেন। এঁদের সাংগঠনিক পদ চলে যেতে পারে। দলের এক নেতার মতে, যেমন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পরিবর্তে পার্থ ভৌমিককে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি করা হতে পারে। তা ছাড়া পার্থ জেলার যুব তৃণমূল সভাপতিও ছিলেন।
তৃণমূলের আরেকটি সূত্রের মতে, দলের প্রতি আনুগত্য রেখে এই ভোট যাঁরা পরিশ্রম করেছেন, তাঁদের পুরষ্কৃত হওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। অনেকে বিপদের দিনে দিদিকে ছেড়ে যাননি। তবে ভোটে লড়ে হেরে গেছেন। তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা দিদি শুরু করে দিয়েছেন। যেমন জ্যোতির্ময় কর, গৌতম দেবদের পুনর্বাসন হয়ে গিয়েছে। বাকি অনেকেই জেলা বা রাজ্য সংগঠনে স্থান পেতে পারেন।