Latest News

মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের, সংঘাতের সিঁদুরে মেঘ জমছে

দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পশ্চিমবঙ্গ সফর ও তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিম্নচাপ তৈরিই হচ্ছিল। এ বার ক্রমশই তা সংঘাতের চেহারা নিচ্ছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ হঠাৎই কেন্দ্রের কর্মিবর্গ মন্ত্রক থেকে চিঠি পাঠানো হয় রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁকে সোমবার সকালের মধ্যে দিল্লিতে নর্থ ব্লকে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে আন্ডার সেক্রেটারি অংশুমান মিশ্র আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্পষ্টতই জানিয়েছেন, ক্যাবিনেট কমিটি অব অ্যাপয়ন্টমেন্ট আপনার কর্মস্থল বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস রুল অনুযায়ী এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করা হচ্ছে যেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবিলম্বে রিলিজ করে দেয় এবং উনি যেন সোমবার সকাল ১০ টার মধ্যে নর্থ ব্লকে কর্মিবর্গ মন্ত্রকে রিপোর্ট করেন।

এখন প্রশ্ন, কেন এই সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হল?

প্রথমেই জানিয়ে রাখা দরকার যে, কর্মিবর্গ মন্ত্রকের ক্যাবিনেট মন্ত্রী হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অর্থাৎ এই মন্ত্রক প্রধানমন্ত্রীর অধীনে রয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর জমানা থেকে শুরু করে মোটামুটি ভাবে সেটাই দস্তুর।

দুই, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী রাজ্য সফরে এসে কলাইকুণ্ডা বিমানবন্দরে নামার পর তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি মুখ্যসচিব। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কাছেই ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ক্ষণিক মাত্র সময়ের জন্য দেখা করলেও মুখ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেননি। অথচ প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা করতে গিয়েছিলেন। ফলে মুখ্য সচিবের উচিত ছিল তাঁর সঙ্গে দেখা করা। তিনি অন্য কোনও পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকলে অন্য কোনও আমলা বা অফিসারকে পর্যালোচনা বৈঠকে পাঠাতে পারতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত প্রধানমন্ত্রীর ডাকা পর্যালোচনা বৈঠকে কোনও অফিসারকে পাঠায়নি রাজ্য।

এ ব্যাপারে মুখ্য সচিবের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজ্যের এক শীর্ষ আমলা বলেন, মুখ্য সচিব মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে কাজ করেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে হয়তো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেননি। যেমন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী এক ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যের কিছু জেলাশাসককে উপস্থিত থাকতে বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু জেলাশাসকদের সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে এখন সার্বিক এই ঘটনাক্রমে স্পষ্ট যে কেন্দ্র-রাজ্য তুমুল সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে। কেন্দ্র নবান্নকে চিঠি পাঠালেও মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়তে রাজি হবে না বলেই অনেকে মনে করছেন। তাতে জটিলতা আরও বাড়তে পারে। এখন দেখার যে পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয়।

You might also like