
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রক্তাক্ত সহযোদ্ধাকে বাঁচানোই তখন ছিল একমাত্র উদ্দেশ্য। মাওবাদীদের ছোড়া বুলেট তখন গেঁথে গিয়েছে বন্ধুর বুকে। জলপাই রঙের পোশাক ভিজে যাচ্ছে রক্তে। চাইবাসার পাহাড় ডিঙিয়ে আহত সহযোদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে ডান পা টা ফ্র্যাকচার হয়ে গিয়েছিল সিআরপিএফ-এর কোবরা ব্যাটেলিয়নের জওয়ান সোমনাথ দাসের। ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ মাওবাদী-সিআরপিএফ এনকাউন্টারে জখম হওয়ার পর বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রাঁচির হাসপাতালে। এখনও শুকোয়নি ক্ষত। ব্যান্ডেজ বাঁধা পা নিয়েই কৃষ্ণনগর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে পলাশিপাড়ায় সুদীপ বিশ্বাসের বাড়িতে ছুটে গেলেন সোমনাথ।
সিআরপিএফ-এর ৯৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নে একসময়ে একসঙ্গে পোস্টিং ছিলেন সোমনাথ আর সুদীপ। ২০১৭ সালের মে মাসে সুকমায় মাওবাদী আক্রমণের সময়েও এক সঙ্গে ছিলেন দু’জন। এ দিন শহিদ জওয়ানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সোমনাথ। সহকর্মীদের টুকরো হতে দেখার যন্ত্রণা। সুদীপের বাড়ির দালানে বসে যখন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন সোমনাথ, প্রতিটা শব্দ থেকে ঝরে পড়ছিল আগুন। সিআরপিএফ-এর এই জওয়ান বলেন, “এ সব মুখে বলে বোঝানো যায় না। সরকার বলুক কী চায়। অন দ্য স্পট করে দেখিয়ে দেব।”
স্বাধীনতার পর নিরাপত্তাবাহিনীর উপর এত বড় জঙ্গি হামলার নজির নেই। পুলওয়ামার ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতর জানিয়ে দিয়েছিল পরের দিন সকালেই হবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠক। সেই বৈঠকের পরেই দিল্লি থেকে ঝাঁসির কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে মোদী বলেন, “কবে, কখন, কী ভাবে প্রত্যাঘাত, সেটা সেনাবাহিনী ঠিক করুক। পারমিশন দিয়ে দিয়েছি।”
বলার অপেক্ষা রাখে না, পুলওয়ামার বদলা নিতে মরিয়া ভারত। পাকিস্তানকে মৌখিক ভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে শুধু থেমে থাকতে চাইছে না নর্থব্লক। পর্যবেক্ষকদের মতে, দ্রুততার সঙ্গে পাল্টা আঘাত হানতে চাইছে ভারত। আর সোমনাথও যেন সেটাই চাইছেন। আর দেরি নয়। জবাব হোক ময়দানে। বুঝিয়ে দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে।