মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রাজ্যপাল লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ, রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখুন। সেটা রাখলে তিন দিন আগেই সেনাবাহিনীকে তলব করা যেত।”
@MamataOfficial কে অনুরোধ, রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখুন। সেটা রাখলে তিন দিন আগেই সেনাবাহিনীকে তলব
করা যেত। @PMOIndia কে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য দিন। অতিরঞ্জিত হিসাব দিলে তার ফল উল্টো হবে।(3/3)— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 24, 2020
সেনা নামানো নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী প্রত্যেকেই রাজ্যের সমালোচনা করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য সরকারের বৃহস্পতিবার সকালেই সেনাবাহিনীর সাহায্য চাওয়া উচিত ছিল। তাহলে অন্তত কলকাতা, সল্টলেক, রাজারহাটের মতো এলাকায় ৭২ ঘণ্টা ধরে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে থাকত না। মানুষকে জলকষ্ট ভোগ করতে হত না।
রাজ্যপাল এখানেই থামেননি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়কে সঠিক তথ্য দিন। অতিরঞ্জিত হিসাব দিলে তার ফল উল্টো হবে।” সুপার সাইক্লোন আছড়ে পড়ার রাত থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতির পরিমাণ বলতে গিয়ে নানা মন্তব্য করেছেন। বুধবার রাতে বলেছিলেন, দুই চব্বিশ পরগনা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সব সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। তারপর গতকাল বলেছেন, এক লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। উমফানের ধাক্কায় রাজ্যে এক কোটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলেও সংবাদমাধ্যমে বলেন তিনি। অনেকের বক্তব্য, রাজ্যপাল এগুলিকেই অতিরঞ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁদের মতে, সঠিক হিসেব দিলে তবেই কেন্দ্রের কাছ থেকে অর্থ পেতে পারে রাজ্য সরকার। নাহলে সেক্ষেত্রেও জটিলতা হতে পারে। রাজ্যপাল সেটাকেই অতিরঞ্জিত বলতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রয়োজনীয় অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্রের অভাবে মানুষের যে দুর্দশা তৈরি হয়েছে তাতে তিনি অসহায় বোধ করছেন বলেও টুইটে লিখেছেন রাজ্যপাল। সেইসঙ্গে উদ্ধারকারী দলের উদ্দেশে বলেছেন, শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা যেন রাজভবনে যায়। তবে এখনই রাজভবন যেতে বারণ করেছেন ধনকড়। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে রাজ্যপাল বলেছেন, এখন শান্ত থাকুন। সহ্য করুন। প্রতিক্রিয়া দেখানোর সময় পরেও পাবেন।
তিনি রাজভবনের দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকে নবান্নের সঙ্গে সংঘাত লেগেই রয়েছে। এমনকি কোভিড পরিস্থিতি নিয়েও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ও মুখ্যমন্ত্রীর পত্রযুদ্ধ দেখেছে বাংলা। কখনও রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলেছেন তো কখনও পাল্টা দীর্ঘ চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে লিখেছেন, তিনি যেন দ্বৈত শাসনের স্বপ্ন না দেখেন। মনে করিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী মানুষের দ্বারা নির্বাচিত। আর রাজ্যপাল কেন্দ্রের মনোনীত। উমফান পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক হেলিকপ্টারে রাজ্যপালের ওঠা এবং মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে তাঁর ৫০ লক্ষ টাকা দানের পর কেউ কেউ হয়তো ভেবেছিলেন, সাইক্লোন এসে বোধহয় রাজ্যপাল-নবান্নের সংঘাত খানিকটা থামিয়ে দিতে পেরেছে। কিন্তু কোথায় কী! রবিবার সকাল সকাল ফের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে কড়া টুইট করলেন ধনকড়।