
এদিন সকালে তিনটি টুইট করেছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তাতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রাজ্যপাল লিখেছেন, “বিদ্যুৎ, জল এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। এটা সংবাদমাধ্যমে লম্বা চওড়া ফিরিস্তি দেওয়ার সময় নয়। বরং দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়াই সময়ের দাবি।”
গতকাল মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার ব্যর্থতা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। তার পাল্টা পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমি রাস্তায় নেমে কাজ করছি। বাড়িতে বসে বড় বড় কথা বলছি না!” এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনেও খোঁচা দেন ধনকড়। টুইটে লেখেন, “জনসমক্ষে রাজ্যের মন্ত্রীরা যে ভাবে তু তু-ম্যায় ম্যায় করছেন, বিধায়ক জনতার হাতে মার খাচ্ছেন, এসব দেখলেই বোঝা যাচ্ছে পরিস্থিতি কী!” গতকালই বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভরত জনতাকে শান্ত করতে গিয়ে মার খেতে হয়েছিল মেটিয়াবুরুজের বিধায়ক আবদুল খালেক মোল্লাকে। এখনও তিনি সিএমআরআই হাসপাতালে ভর্তি।
রাজ্যপাল বলেছেন, “এই পরিস্থিতিতে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো আর বলির পাঁঠা খোঁজা বন্ধ হোক। গ্রামীণ এলাকাতেও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে হবে। ওই এলাকাকে উপেক্ষা করা যাবে না।”
শহরের লন্ডভন্ড অবস্থার পর কখনও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন লকডাউনের কারণে কর্মীর অভাবে সিইএসসি কাজ করতে পারছে না। আবার কখনও বলেছেন, সিইএসসি সিপিএম জমানার। অনেকের মতে রাজ্যপাল সেটাকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন। সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ধনকড় লিখেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করব, যেন সাংবিধানিক রীতি মেনে আমাকে পরিস্থিতির আপডেট দেন।”
ঘূর্ণিঝড়ের পর কলকাতা শহর-সহ দক্ষিণবঙ্গের অবস্থা দেখে অনেকেরই বক্তব্য, ঝড়ের ফলে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে সে ব্যাপারে রাজ্য প্রশাসনের সম্যক ধারণাই ছিল না। তাই পর্যাপ্ত প্রস্তুতিও নেয়নি প্রশাসন। সেই কারণেই দুর্ভোগ এখনও চলছে। অনেকের বক্তব্য, আবহাওয়া দফতরের চূড়ান্ত সতর্কতা ছিল যে উমফানে তছনছ হবে কলকাতা শহর। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুরসভা হাত গুটিয়ে বসেছিল।
এর আগে সেনা নামানো নিয়েও সরকারের উদ্দেশে কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্যপাল। বলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনদিন আগেই সেনা নামানো যেত। এবার জল-বিদ্যুৎ নিয়েও নবান্নের ভূমিকার সমালোচনা করলেন ধনকড়।
শাসকদল রাজ্যপালের মন্তব্য নিয়ে সরকারি ভাবে প্রতিক্রিয়া না দিলেও রাজ্যের এক মন্ত্রী বলেন, “রাজ্যপালের কাজ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে টুইট করা। মুখ্যমন্ত্রী ময়দানেই আছেন। বড় বড় ভাষণ না দিয়ে উনি রাস্তায় নামুন।”