
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাছের তেলে মাছ ভাজার মতোই ব্যাপার। অন্ডালের উখড়ার সুখপাড়া গ্রামে মাছধরার জন্য যে টিকিট বিক্রি হয় সেই টাকাতেই উন্নয়ন হয় সুখপুকুরের। সেই টাকা গ্রামের উন্নয়নের কাজেও লাগানো হয়। এখন চলছে সেই মাছধরা।
বিশাল জলাশয়ে এ বছর করোনা আবহেও ব্যতিক্রম হয়নি মাছ ধরার বার্ষিক রুটিনে। এক দিনে এখানে মোট ১৮ জন মৎস্যশিকারী সুযোগ পান। প্রবেশমূল্য তিন হাজার একশো টাকা। টিকিট কাটতে হয় আগের দিন। রুই, কাতলা, মৃগেল প্রভৃতি মাছে ভরা পুকুরে তিন দিনে সুযোগ পান সর্বাধিক ৫৪ জন। গ্রামের পুকুরটি সুখপুকুর নামে পরিচিত। উখড়া থেকে এই পুকুরে মাছ ধরতে আসা অজয় মাঝি বলেন, “আমি প্রতি বছরই এখানে মাছ ধরতে আসি। এবারেও এসেছি। প্রথম পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে কুড়ি কেজি মতো মাছ ধরে ফেলেছি।” মাছ ধরতে আসা নীতেশ বিন বলেন, “সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে দশ কেজি মতো মাছ ধরতে পেরেছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও অনেক মাছ ধরতে পারব।” এই পুকুরে রুই, কাতলা, মৃগেল প্রভৃতি মাছ রয়েছে। বছরে এক বার মাছ ধরা হয়। তাই অধিকাংশ মাছের মাপ মাঝারি।
এখানে মাছকে খাওয়ানো হয় ৫৬ ভোগ। জগন্নাথদেবকে যে ছাপ্পান্ন ভোগ দেওয়া হয় তার সঙ্গে এর অবশ্য কোও সম্পর্ক নেই। এখানে মাছের ‘ছাপ্পান্ন ভোগ’ মাছের বিশেষ চার যাতে মেশানো হয় রকম জিনিস। এর প্রধান উপাদান ভাতের ফ্যান। তাতে মেশানো হয় পাঁউরুটি, জারদা পোলাও, মিঠা পোলাও, পিঁপড়ের ডিম, ঘি, মাখন প্রভৃতি পঞ্চান্ন রকম জিনিস। সব মিলিয়ে ছাপ্পান্ন ভোগ! তাতে নাকি মাছ ভাল টোপ গেলে।
জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে শখের মাছ শিকারিরা আসেন। তাঁরা ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মাছ ধরার সুযোগ পান। লকডাউনে যখন লোকজন ঘরে থেকে ক্লান্ত তখন মৎস্যশিকারিরা মুক্তির স্বাদ পেলেন। প্রতিযোগিরা তিনটির বেশি বঁড়শি ব্যবহার করতে পারেন না। বারো ঘণ্টার মধ্যে যত মাছ ধরতে পারবেন এক জন শিকারি সেই সমস্ত মাছ তাঁর।
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দয়াময় সিংহ এই আয়োজন করেছেন। তিনি বলেন, “প্রতি বছর এখানে মাছ ধরার সুযোগ দেওয়া হয়। যাঁরা চান তাঁরা টিকিট কেটে মাছ ধরেন। তিন দিনে পুকুর থেকে যে আয় হয় সেই টাকা সুখপুকুরের সংস্কারে কাজে লাগানো হয়। ওই টাকায় গ্রামের উন্নয়নমূলক কাজও করা হয়।”