
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত ১১ ফেব্রুয়ারি নবান্ন অভিযানে গিয়ে পুলিশের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলেন বাঁকুড়ার কোতলপুরের ডিওয়াইএফআই নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্দ্যা। মাথা, কোমর, বুক ও কিডনিতে চোট পান ৩২ বছরের মইদুল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতায় ময়দানের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয়েছে মইদুলের।
পেশায় অটোচালক মইদুল ডিওয়াইএফআইয়ের বাঁকুড়ার গোপীনাথপুর ইউনিটের সেক্রেটারি ছিলেন। দক্ষ সংগঠক হিসেবেই তাঁর পরিচিতি ছিল। গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাকি কমরেডদের সঙ্গে তিনিও আসেন নবান্ন অভিযানে। একদম সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। ব্যারিকেড ভাঙার পরেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় বাম ছাত্র ও যুব নেতাদের। লাঠির আঘাতে রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন মইদুল। তাঁকে উদ্ধার করে ময়দানের কাছে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই কয়েক দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন তিনি। কিন্তু সোমবার সকালে শেষ হয়ে গেল তাঁর লড়াই।
বাম যুব নেতৃত্বের অভিযোগ, সেদিনের পর থেকে পাঁশকুড়ার এক যুব নেতাকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গত বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের পরে শুরু হয় বাম ছাত্র-যুবদের মূল কর্মসূচি। কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল করে এগোতে থাকে ১০টি সংগঠনের সদস্যরা। ধর্মতলায় ডোরিনা ক্রসিংয়ে ছিল পুলিশি ব্যারিকেড। তা ভেঙে আন্দোলনকারীরা এগোতে গেলে শুরু হয় উত্তেজনা। জল কামান দিয়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ, চালায় কাঁদানে গ্যাস। অভিযোগ, আন্দোলনকারীদের তরফ থেকেও পাল্টা ইট ছোড়া হয়। এর পরেই বেধড়ক লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিশকে। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ধর্মতলা।
দেখা যায়, বহু বাম কর্মী-সমর্থকের মাথা ফেটে গিয়েছে। টিয়ার গ্যাসের ঝাঁঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। রাস্তায় শুয়ে পড়তে দেখা যায় বাম ছাত্র-যুবদের। অ্যাম্বুল্যান্স এসে হাসপাতালে নিয়ে যায় অনেককে। গ্রেফতারও হন বহুজন। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই বিকেলে তাঁদের দেখতে যান সিপিএমের অনেক নেতা। এর প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধেরও ডাক দেয় ১৬টি বাম দল ও ছাত্র-যুবরা।