
দ্য ওয়াল ব্যুরো : আজ থেকে ২৭৫ বছর আগের কথা। তখন ছিল অবিভক্ত ২৪ পরগণা। ১১৫০ বঙ্গাব্দে বিহারী লাল দেব-এর হাত ধরে ফলতার মালা মহিরামপুর গ্রামে জমিদারী শুরু করেন কালীকৃষ্ণ দেব। তাঁর হাত ধরেই ১১৫২ বঙ্গাব্দে শুরু হয় দুর্গাপুজো। সেই শুরু। এখন জৌলুস না থাকলেও রীতি মেনে হয় এই দেব-সরকার বাড়ির পুজো। আশেপাশের গ্রাম থেকে সবাই আসেন পুজোর এই আনন্দে সামিল হতে।
পরিবার সূত্রে খবর, সে সময় কালীকৃষ্ণ দেবের জমিদারী শুধুমাত্র ২৪ পরগনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়, এমনকি রাজ্যের বাইরেও অনেক জায়গায় ছিল তাঁর আধিপত্য। সেই সময় এই মহিরামপুর গ্রামেই শুরু হয় এই পুজো। জানা যায়, এই পুজোকে কেন্দ্র করে হত বিরাট যাত্রা মেলা। কলকাতার এমন কোনও বড় দল ছিল না, যারা এই চারদিন সেখানে যাত্রা করতে যেত না।
জানা যায়, তখন নাকি জমিদার বাড়ির পুজোয় সবার প্রবেশের অধিকারও ছিল না। মহিলারা বাড়ির ভিতর থেকে বেরোতে পারতেন না। তবে ধীরে ধীরে এই বেড়াজাল একটু একটু করে আলগা হতে থাকে। কিছু দিনের মধ্যেই এই দেব-সরকার বাড়িরর পুজো হয়ে ওঠে গ্রামের পুজো।
আজ সবটাই অতীত। ধীরে ধীরে জৌলুস হারিয়েছে জমিদারবাড়ি। ফিকে হয়ে গেছে দালানবাড়ির রং। সবটাই ঢেকেছে সবুজ আগাছায়। যাত্রা পালার মাঠটাও এখন খালিই পড়ে থাকে। তবে আজও রীতি মেনেই হয় পুজো। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত হয় পাঁঠাবলি। কালের নিয়মে রং ফিকে হয়ে গেলেও আনন্দ ফিকে হয়নি। দেশে-বিদেশে যেখানেই পরিবারের সদস্যরা থাকুন না কেন, পুজোর এই চারটে দিন তাঁরা হাজির হন ফলতায়। পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন তাঁরা। সেই সঙ্গে যোগ দেয় মহিরামপুর গ্রাম। আজও যে এটা তাঁদের গ্রামের পুজো হয়েই থেকে গিয়েছে।