
বিহারের কিষাণগঞ্জ থানার স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও)অশ্বিনী কুমারের (৫০) মৃত্যুতে হইচই শুরু হয়ে গেছে ইসলামপুরের গ্রামে। খবর পেয়েই ছুটে এসেছেন বিহারের পদস্থ পুলিশকর্তারা, উত্তর দিনাজপুর জেলার পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বিশাল পুলিশ বাহিনী। জানা গেছে, ঘটনায় জড়িত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের মধ্যে যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদেরও খোঁজ চলছে।
ঘটনার সূত্রপাত গতকাল রাতে। পুলিশ জানিয়েছে, মোটবাইক চুরির একটি চক্রকে ধরতে তদন্ত চালাচ্ছিলেন পুলিশ কর্তা অশ্বিনী কুমার। অপরাধীরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলায় ঢুকে পড়েছে এমন খবর ছিল। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে ওই চক্রের কয়েকজন পান্ডা লুকিয়ে আছে এমন খবর পেয়ে রাতেই নিজের টিম নিয়ে পৌঁছে যান অফিসার। গোটা গ্রাম ঘুরে ঘুরে তল্লাশি শুরু করেন। সেই সময় আচমকাই গ্রামবাসীরা পুলিশ অফিসারকে ঘিরে ফেলেন। প্রথমে কথা কাটাকাটি শুরু হয়, তারপর হাতাহাতি বেঁধে যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, অশ্বিনী কুমারকে ঘিরে ধরে মারতে শুরু করে গ্রামবাসীরা। ওই দলে দুষ্কৃতীরাও ছিল বলে দাবি পুলিশের। বেধড়ক মারের চোটে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পুলিশ কর্তার। খবর পেয়েই ছুটে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। নিহত পুলিশ কর্তার দেহ উদ্ধার করে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা বলেছেন, নিহত পুলিশ অফিসারের দেহ ইসলামপুর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। মৃতদেহের ময়নাতদন্ত চলছে।
বিহার পুলিশের পূর্ণিয়া রেঞ্জের আইজি সুরেশ প্রসাদ বলেছেন, দুষ্কৃতীরাই হামলা চালিয়েছিল অশ্বিনী কুমারের ওপরে। সেই সঙ্গে গ্রামবাসীদেরও অনেকে ছিল। পান্তাপাড়া গ্রামে তল্লাশি চালানোর জন্য স্থানীয় পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন বিহার পুলিশের কর্তা। কিন্তু, ভোটের মুখে তাঁকে বাহিনী দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তাই অপেক্ষা না করে নিজেই রাতে তল্লাশিতে গিয়েছিলেন অশ্বিনী কুমার। আর তখনই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায়। আইজি জানিয়েছেন, ফিরোজ আলম (৩৫), ফিরোজের ভাই আবুজার আলম (২৫) ও তাঁদের মা শাহিনুর খাতুনকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। ফিরোজই নাকি এই গণপিটুনির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। তাকে জেরা করে বাকি গ্রামবাসীদের খোঁজ শুরু হয়েছে।