
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকির সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতার প্রশ্নে তীব্র আপত্তি তুললেন রাজ্যসভায় কংগ্রেসের উপ দলনেতা আনন্দ শর্মা।
রবিবার বিগ্রেডে আব্বাসের সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেসের তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জিতিন প্রসাদ। সেই প্রসঙ্গেই এদিন টুইট করে আনন্দ শর্মা বলেন, “আইএসএফ বা সে ধরনের কোনও পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট গঠন দলের মৌলিক বিচারধারা, গান্ধীবাদ এবং নেহরুবাদী ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের পরিপন্থী। এ ব্যাপারে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে আলোচনা করে অনুমোদন নেওয়া উচিত ছিল”।
আনন্দ শর্মার কথায়, “সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস সিলেকটিভ হতে পারে না। সব রকম সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে হবে। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি (ব্রিগেডে) ও সমর্থন লজ্জাজনক, ওনাকে কৈফিয়ত দিতে হবে।”
আনন্দ শর্মাকে পাল্টা জবাব দিয়ে টুইটেই পাল্টা সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে, অধীর চৌধুরী বলেন, “আনন্দ শর্মা কে? উনি কার হাতে তামাক খাচ্ছেন? আমি ওনার কথার জবাব দেব কেন?” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, প্রথমত আইএসএফের সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও সমঝোতা চূড়ান্ত হয়নি। দ্বিতীয়ত আমি যা করার তা দলীয় হাইকম্যান্ডের মত নিয়েই করছি। কংগ্রেসের এক দল নেতা এখন ভিতর থেকেই দলের ক্ষতি করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এদেরও চিনে নিচ্ছেন মানুষ।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, কংগ্রেস সমঝোতা না করায় রবিবার প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আব্বাস। অধীর চৌধুরীকে তিনি বার্তা দিয়ে বলেছেন, ভিক্ষা নয় ভাগিদারি চাই। আব্বাসের সেই কথায় অধীরবাবু যে ক্ষুন্ন তাও গোপন থাকেনি। এই অবস্থায় বরং মিটমাটের জন্য এখন ভূমিকা নিয়েছে বামেরা। এদিন অধীর চৌধুরীর পাশে বসে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, আব্বাসউদ্দিনের হয়ে তো কিছু বলতে পারব না। কিন্তু যখন কোনও সমঝোতার জন্য আলোচনা হয়, তখন সবাইকেই এক সুরে অভিন্ন মত প্রকাশ করতে হয়। আশা করি উনি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বুঝে যাবেন। অর্থাৎ বিমানবাবু বোঝাতে চান, আব্বাস রাজনীতিতে নতুন। রাজনীতির আদব কায়দা বুঝে উঠতে তাঁকে সময় দিতে হবে।
আব্বাসের সঙ্গে জোট গঠন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ছেন বামেরাও। কিন্তু আবদুল মান্নান বা বিমান বসুদের এ ব্যাপারে বক্তব্য স্পষ্ট। তা হল, আব্বাস রাজনীতির মঞ্চে দাঁড়িয়ে সংকীর্ণ ধর্মীয় কথা বলেনি। তিনি বাংলা, বাঙালির কথা বলেছেন। তিনি সর্বজনের কথা বলেছেন। কোনও মৌলবাদী শক্তি বিচ্ছিন্ন না থেকে সর্বজনের হিতের কথা বলে যদি রাজনীতির মূলস্রোতে মিশতে চায়, তা হলে ক্ষতি কোথায়।
এদিন বিমান বসুও বলেন, আব্বাস তথা আইএসএফ শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রার্থী করবে না। তাঁরা তফসিলি জাতি, উপজাতি আসনেও প্রার্থী দেবে। সাধারণ জাতের প্রার্থীও তাঁরা দেবে।