
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার অণ্ডাল থানার দক্ষিণখণ্ডের এক গ্রামে চলছে বেসরকারি স্কুল। সেখানে পাশাপাশি ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে আছে পড়ুয়ারা। কারও মুখেই নেই মাস্ক। স্যানিটাইজার এখানে দূরঅস্ত্। এলাকা সূত্রে জানা গেছে ইসিএলের পরিত্যক্ত একটি বাড়ি মেরামত করে সেখানে এই স্কুল চলছে।
করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশে লকডাউন চালু করার পরে সরকার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। সরকারি নির্দেশ মেনে রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে একটি স্কুল চলছে তাও কোনও বিধি না মেনেই। একটি এনজিও এই স্কুল পরিচালনা করে। তারা প্রত্যেক দিন মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করে। সেখানে রান্না করা খাবার দেওয়া হয় পড়ুয়াদের।
মহামারী কী, মাস্ক না পরলে কী বিপদ ঘটতে পারে সে ব্যাপারে কোনও ধারণা নেই পড়ুয়াদের। ধারণা থাকার কথাও নয়। তাদের জিজ্ঞাসা করা হলে রাখঢাক না করেই জানিয়ে দেয়, “মাস্ক না পরলে কেউ কিছু বলে না।” দীর্ঘক্ষণ মাস্ক পরে থাকা তাদের কাছে অস্বস্তির ব্যাপার। তাই তারা সে সব পরে না। অভিভাবকরা জানেন না যে মাস্ক কেন পরতে হয় বা আদৌ সেটি পরার দরকার আছে।
স্কুলের পরিচালক শ্রেয়সী হাজরা বলেন, “আমি ২০১৮ সালের জুন মাস থেকে এই স্কুল চালাচ্ছি। এই স্কুল চালু করেছি গরিব বাচ্চাদের পড়াশোনা শেখানোর জন্য। কারও কাছে টাকা নেওয়া হয় না। মিড-ডে মিলের মতো খাবারও দেওয়া হয়। এখানে আমার কোনও স্বার্থ নেই। মাস্ক পরার ব্যাপারটা কঠোর ভাবে দেখব। এটা আমার ভুল যে ওরা মাস্ক পরছে না।” সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ঝুঁকি নিয়ে কেন তারা স্কুল চালু রেখেছে সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
অণ্ডালের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলেকে এই স্কুল চলার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এ ভাবে যে নিয়ম ভেঙে স্কুল চলছে সে কথা তিনি জানেন না। ঘটনার কথা জানার পরে তিনি অণ্ডাল থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন তদন্ত করতে।
অভিভাবকরা জানিয়েছেন যে ওই স্কুলটিতে বিনা পয়সায় পড়ানো হয় এবং সঙ্গে খেতেও দেওয়া হয়। তাই ছেলেমেয়েদের পাঠাতে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। লকডাউনের ফলে এখন তাঁদের অনেকের রোজগারও কমেছে। এই অবস্থায় বাড়ির ছেলেমেয়েরা বাইরে গিয়ে ভরপেট খেতে পেলে তাঁদের লাভই হচ্ছে। বিষয়টিকে এভাবেই দেখছেন তাঁরা।