
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনা সংক্রমণ সাঙ্ঘাতিকভাবে বেড়ে গেছে। রাজ্যজুড়ে সংক্রমণের নতুন ঢেউ আছড়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, কোভিডের থার্ড ওয়েভ এসে গেছে। রাজ্যে দৈনিক আক্রান্ত ৬ হাজার পার করে ফেলেছে। এর মধ্যেই কোভিডের অতি সংক্রামক প্রজাতি ওমিক্রন থাবা বসিয়েছে। ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে সংক্রমণ। হাসপাতালে ফের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন যাঁরা তাঁরাও দিশাহারা। বাড়িতেই আইসোলেশনে থাকবেন নাকি ভর্তি হতে হবে হাসপাতালে, এই নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে তাই কোভিড রোগীদের সঠিক দিশা দেখাতে নতুন গাইডলাইন দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
গাইডলাইনে খুব স্পষ্ট করে বলা হয়েছে কোভিড রোগীদের কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। কী ধরনের সমস্যা হলে তবে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে, সেখানে সম্ভাব্য চিকিৎসাপদ্ধতি কী হতে পারে তাও উল্লেখ করা হয়েছে। কোন রোগীরা বাড়িতেই আইসোলেশনে থাকবেন তাও স্পষ্ট করা আছে গাইডলাইনে।
কী কী বলা হয়েছে গাইডলাইনে?
করোনার কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে–বেশিরভাগেরই উপসর্গ নেই।
কোমর্বিডিটির রোগীদের অনেকেই অ্যাসিম্পটোমেটিক বা উপসর্গহীন।
মদু বা মাঝারি উপসর্গের মধ্যে শুকনো কাশি, স্বাদ ও গন্ধ চলে যাওয়া, নাক বন্ধ, গলা ব্যথা, পেট খারাপ, মাথা যন্ত্রণা ও প্রচণ্ড দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে রোগীদের।
তাছাড়া বারে বারে জ্বর আসতে পারে।
মানসিক অস্থিরতা তেমন দেখা যাচ্ছে না।
শ্বাসের হার মিনিটে ২৪ এর কম।
হোম আইসোলেশনে কী কী নিয়ম মানতে হবে— মৃদু উপসর্গ থাকলে ও শ্বাসের সমস্যা না হলে হোম আইসোলেশনে থাকারই পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। সেক্ষেত্রে বাড়িতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।
প্রথমত–আলাদা ঘরে আইসোলেশনে থাকতে হবে।
ফেস-মাস্ক, পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলা বাধ্যতামূলক। বারে বারে হাত ধুতে হবে। সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। ড্রপলেট যাতে না ছড়ায় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
জ্বর ও গায়ে হাত-পায়ে ব্যথা থাকলে প্যারাসিটামল খেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডোজ ঠিক করতে হবে।
অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ নেওয়া যেতে পারে, পেটের সমস্যায় ল্যাক্সেটিভ জাতীয় ওষুধ, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে।
কাশি, নাক বন্ধ ও শ্বাসের হাল্কা সমস্যা হলে Budesonide 800 দিনে দুবার করে পাঁচদিন নিতে হবে। কোনও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ নেওয়া চলবে না।
কখন বুঝবেন বিপদ বাড়ছে? কারা ভর্তি হবেন হাসপাতালে?
সাত দিন ধরে টানা জ্বর। তাপমাত্রা বেশি থাকলেই সতর্ক হতে হবে।
বারে বারে জ্বর হওয়া।
শ্বাস নিতে সমস্যা।
শ্বাসের হার মিনিটে ২৪ এর বেশি।
অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ৯৪ এর কম।
প্রচণ্ড কাশি, মাথা ব্যথা।
বুকে ব্যথা।
মানসিক অস্থিরতা, প্রচণ্ড দুর্বলতা, ঝিমুনি। তাছাড়াও নতুন কোনও উপসর্গ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে।
৬০ বছরের উর্ধ্বে হার্টের রোগ, ফুসফুস, লিভার ও কিডনির রোগ, ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, ক্রনিক লিভার ডিজিজ, সিওপিডি ও ক্যানসারের রোগীদের সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
কোভিড ওয়ার্ডে অ্যান্টি-পাইরেটিক ওষুধ হিসেবে প্যারাসিটামল দেওয়া যেতে পারে। অক্সিজেন দিতে হলে ফেস-মাস্ক, ক্যানুলার মাধ্যমে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে পারেন ডাক্তাররা। প্রতি কেজি ০.১ থেকে ০.২ মিলিগ্রাম ডোজে পাঁচ দিন ডেক্সামিথাসোন দেওয়া যেতে পারে (দিনে ৮ মিলিগ্রামের বেশি নয়)। খুব দরকার হলে রেমডিসিভির দেওয়া যেতে পারে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রটোকল মেনে দিতে হবে।