Latest News

প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করেন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য, ‘মমতা হাতে কাগজ ধরিয়ে বেরিয়ে যান’

দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমানায় কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক কখনওই খুব একটা মধুর ছিল না। মনমোহন সিং সরকারের সঙ্গে যেমন সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল, তেমনই মোদী সরকারের সঙ্গে অহোরাত্র সংঘাত তো চলছেই। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে সেই পরিবেশ আরও এক প্রস্ত তিক্ত হল। তা এতটাই যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘দাম্ভিক’, রাজ্যের মানুষের কল্যাণের ব্যাপারে ‘উদাসীন’ বলে মন্তব্য করলেন কেন্দ্রের শীর্ষ কর্তারা।

তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কাছাকাছিই ছিলেন। কিন্তু তাঁদের কেউ প্রধানমন্ত্রীকে রিসিভ করেননি। রিভিউ মিটিংয়ে স্ক্রিন লাগিয়ে প্রেজেন্টেশনের জন্য সব ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎই ঝড়ের গতিতে এসে একটি রিপোর্ট দিয়ে চলে যান। রিভিউ মিটিংয়ে রাজ্যের কোনও অফিসার ছিল না।

আরও পড়ুন: মোদীর কাছে অর্থ চাইলেন না নবীন, বললেন কেন্দ্রের উপর কোভিড-বোঝা, ঝড়ের ক্ষতিপূরণ আমরাই সামলে নেব

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য সাংবাদিকদের বলেছেন, দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠক পূর্ব নির্ধারিত ছিল। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি যে, আপনি এতদূর থেকে দেখা করতে এসেছেন, তাই আমি দেখা করতে এলাম। আমার অন্য মিটিং ঠিক রয়েছে। আমাকে যেতে হবে”।

ওড়িশা বা বাংলার ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকা পরিদর্শনের জন্য বৃহস্পতিবার দুই রাজ্যে সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ওড়িশায় যেমন তিনি মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েককে নিয়ে রিভিউ মিটিং করেছেন, তেমনই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা করার উদ্দেশ্য ছিল তাঁর।

প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের তরফে বলা হচ্ছে, এ ধরনের বিপর্যয়ের পর বিরোধী দলনেতাদেরও বৈঠকে ডাকা প্রধানমন্ত্রী প্রথায় পরিণত করেছেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। অতীতে কেরল, কাশ্মীরেও এমনটাই হয়েছে। ওমর আবদুল্লাহ বিরোধী নেতা হিসাবেই কাশ্মীরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন যা করেছেন, তা সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বেনজির ঘটনা।

কেন্দ্রের এও বক্তব্য, এর আগে কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বা রাজ্যপালের ডাকা বৈঠক নিয়ে এমন সংকীর্ণ আচরণ করেননি। এই রাজনীতির আসলে ক্ষতি হবে রাজ্যের মানুষেরই।

বাংলায় ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিপূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট পেশ করে মুখ্যমন্ত্রী এদিন ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ চেয়েছেন। আবার পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক বলেছেন, যে হেতু কেন্দ্রের উপরে কোভিডের এত বোঝা, তাই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনও অর্থ সাহায্য চাননি।

তবে এদিন প্রধানমন্ত্রী ওড়িশা ও বাংলা সফর সেরে দিল্লি ফেরার পর জরুরি ভিত্তিতে ওড়িশার জন্য ৫০০ কোটি টাকা এবং বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের জন্য ২৫০ কোটি টাকা করে অনুদান ঘোষণা করেছেন।

You might also like