
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সিভিক ভলান্টিয়ারকে ‘আটক’ করল স্থানীয় মানুষজন। তারপর পোস্টে বেঁধে চলল দেদার গণধোলাই। শনিবার সাতসকালে এই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বোগড়া কলোনি এলাকায়।
অভিযোগ কী?
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই কলোনি এলাকার একটি বাড়ির ভদ্রলোক নাইট ডিউটিতে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই তাঁর স্ত্রীর কাছে আসতেন এই সিভিক ভলান্টিয়ার। এটা বেশ কিছুদিন ধরে চলছিল বলে তাঁরা জানিয়েছেন। সারা রাত কাটিয়ে সকালে স্বামী ফেরার আগেই ফিরে যেতেন এই যুবক। কিন্তু এদিন হাতেনাতে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। পোস্টে বেঁধে চলে বেধড়ক মারধর।
খবর পেয়ে বোগড়া কলোনি এলাকায় যায় জামুড়িয়া থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে পুলিশকর্মীরা গিয়ে পোস্টে বাঁধা সিভিক ভলান্টিয়ারকে উদ্ধার করতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে তুমুল বচসা বাঁধে। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়। এরপর পরকীয়ায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার ও ওই মহিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অনেক দিন ধরেই তাঁরা ওত পেতে ছিলেন। কখনও কখনও স্থানীয়দের চোখ এড়াতে কাক ডাকার আগেই ওই মহিলার বাড়ি ছেড়ে চলে যেতেন সিভিক ভলান্টিয়ার যুবক। ফলে রাতে ঢুকতে দেখলেও সকালে বেরোনোর সময় ধরতে পারতেন না স্থানীয়রা। কিন্তু এদিন আর ‘মিস’ হয়নি। তবে উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে সকালে বোগড়া কলোনি এলাকায় এত লোক জড়ো হয়েছিলেন যে, সামাজিক দূরত্বের বিধি শিকেয় উঠেছিল বলে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন। অধিকাংশের মুখেই মাস্ক ছিল না। ফলে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন অনেকে।
গত বছর পরকীয়া বা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। অনেকের বক্তব্য, শীর্ষ আদালতের সেই রায়ের পরেও জামুড়িয়ায় স্থানীয়রা যে ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন তা উত্তর ও পশ্চিম ভারতের খাপ পঞ্চায়েতের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। তা ছাড়া তাঁদের আরও বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে গণপিটুনি প্রতিরোধ আইন পাশ হয়েছে। সারা দেশের পরিস্থিতি দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার বিধানসভায় সেই আইন পাশ করেছিলেন উনিশের লোকসভার কয়েক মাস পরেই। এখানে সিভিক ভলান্টিয়ারকে পোস্টে বেঁধে পিটিয়ে স্থানীয়রা সেই আইনও ভেঙেছেন। তাঁদের দাবি, পুলিশের উচিত এই ঘটনা যাঁরা জড়িত তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।