
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গঙ্গাসাগর (gangasagar mela) মেলা নিয়ে এবছর মেলা সংক্রান্ত তথ্য, সরকারি বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদি বাংলার পাশাপাশি হিন্দিতেও (hindi) প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার (government)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) সোমবার নবান্নে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্য স্তরের বৈঠক করেন। আজ মঙ্গলবার তিনি বৈঠক করবেন সাগরদ্বীপে। আগামীকালও সেখানে তাঁর বৈঠক রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রশাসনিক বৈঠকের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী সাগরমেলার (sagarmela) প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবেন।
সোমবার নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী (cm) নির্দেশ দেন, সরকারি বিজ্ঞপ্তি (directives), তথ্য, মেলা সম্পর্কিত নির্দেশিকা ইত্যাদি যেন বাংলার পাশাপাশি হিন্দিতে স্পষ্ট করে লিখে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় টাঙিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার বিকেল থেকেই প্রশাসন (administration) সেই কাজ শুরু করে।
প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, প্রতি বছরই মেলায় কিছু বিজ্ঞাপন, বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদি হিন্দিতে প্রচারের ব্যবস্থা রাখা হয়। কিন্তু এ বছরের মতো তা ব্যাপক ছিল না । এবার হাওড়া, শিয়ালদা স্টেশন, বাবুঘাটের অস্থায়ী আস্থানা এবং নামখানা স্টেশন থেকে শুরু করে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গন পর্যন্ত গোটা পথে হিন্দিতে প্রচারে আয়োজন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যা থেকে প্রশাসন এবং রাজনৈতিক মহলের একাংশের মনে করছে এই উদ্যোগের পিছনে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোটা দেশের মানুষের (hindi heartland) কাছে পৌঁছনোর একটা চেষ্টা আছে। এমনীতে বাংলায় এক কোটির ওপরে হিন্দিভাষী মানুষ বসবাস করেন। তাদের কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে হিন্দিতে পঠন-পাঠনের নতুন বেশ কিছু ব্যবস্থা এরাজ্যে করেছেন। আবার তাঁর উদ্যোগেই ছট পুজোয় বিহারের থেকে বাংলাতে সরকারি ছুটি বেশি।
কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলাকে ঘিরে হিন্দিতে প্রচারের বিপুল আয়োজনের পিছনে অনেকেই মনে করছেন, এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ২০২৪-এর অঙ্ক। গঙ্গাসাগর মেলা হচ্ছে মিনি কুম্ভ। গোটা ভারতের মানুষ এই মেলায় যোগ দেন। উত্তর ও মধ্য ভারতের হিন্দিভাষী রাজ্য ছাড়াও গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রের প্রচুর মানুষ গঙ্গাসাগরে আসেন। মারাঠি এবং গুজরাতিরাও হিন্দি সচ্ছন্দ। আবার দক্ষিণ ভারত এবং উত্তর পূর্বের মানুষও কাজ চালানোর মত হিন্দি পড়তে ও বলতে পারেন। হিন্দিতে বিজ্ঞপ্তি, তথ্য প্রচারের ব্যবস্থা থাকলে সাগরে আসা গোটা হিন্দুস্থানের মানুষের কাছে সরকারের বক্তব্য পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। তাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যেমন প্রচার হবে তেমনিই মুখ্যমন্ত্রীর একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরা সম্ভব হবে গোটা দেশের মানুষের কাছে।
বাংলায় বিধানসভা ভোটে অভাবনীয় সাফল্য লাভের পর তৃণমূল পাখির চোখ করেছে ২০২৪ এর লোকসভা ভোট। এখন থেকেই তার প্রস্তুতি হিসেবে বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখনও ঠিক আছে লোকসভা ভোটের সময় মুখ্যমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাবেন। যেভাবে ২০১৪- র আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গোটা দেশে চষে বেরিয়েছিলেন। হিন্দুস্থানের হৃদয় ছুঁতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাগরমেলা এবং হিন্দিকে হাতিয়ার করলেন বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে।