
কর ঘোষণায় ভেজাল, ‘২ লাখ দিয়ে আড়াই কেড়ে নিয়েছে’, বোঝানোর চেষ্টা মমতার
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লোকসভা ভোটের আগে বুধবার শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই বাজেটে ব্যক্তিগত আয়করে ছাড় ঘোষণা নিয়ে যখন একাংশের মধ্যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বোঝাতে চাইলেন—“সবটাই ভেজাল (adulterated budget)। মাছের তেলে মাছ ভেজেছে”।
এদিন বর্ধমানের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁরা কর ঘোষণা শুনে মজা পেয়েছেন, যারা ভাবছেন, কত কিছু হল, তাঁদের বলছি, সবটাই বুজরুকি। কথার কারসাজি দিয়ে মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়েছে। আসলে আপনার রোজগার আরও ঝরঝরে করে দিয়েছে”।
মমতা বোঝানোর চেষ্টা করেন, কীভাবে ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। আসল ঘটনা হল, ২ লক্ষ টাকা বাড়িয়ে আড়াই লক্ষ টাকা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অনেকে ভাবছেন ৫ লক্ষ টাকা বেড়ে ৭ লক্ষ টাকার স্ল্যাব হয়েছে। তা হলে শুনুন—জীবন বিমা, পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড তথা পিপিএফ, কর সাশ্রয়ের জন্য মিউচুয়াল ফান্ড বাবদ এতদিন ৮০ সি ধারায় যে ছাড় পাওয়া যেত, তা নতুন কর কাঠামোয় তুলে দেওয়া হয়েছে। আর ছাড় পাবেন না। গৃহ ঋণে সুদ বাবদ যে ছাড় পেতেন তাও আর পাবেন না। ৮০ ডি ধারায় মেডিক্লেম বাবদ যে ৫০ হাজার টাকা ছাড় পাওয়া যেত, নতুন কর কাঠামোয় তা আর পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, ৮০ সিসিডি ধারায় পেনশন স্কিমে আমানত বাবদ যে ৫০ হাজার টাকা ছাড় পাওয়া যায়, তাও নতুন কাঠামোয় পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ আড়াই লক্ষ টাকা ছাড়ের সুযোগ কেড়ে নিয়েছে ২ লক্ষ টাকার স্ল্যাব বাড়িয়ে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই সমালোচনার জবাবে এদিন বিজেপি মুখপাত্র বলেন, পুরনো কর কাঠামোর আওতায় এই সব ছাড় পাওয়ার সুযোগ এখনও রয়েছে। উনি মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, বিজেপি এবং তৃণমূল দুই দলই আসলে ধারণা তৈরির চেষ্টা করছে। কর ছাড় দিয়ে বিজেপি মধ্যবিত্ত, বেতনভুক শ্রেণির একটা অংশকে পাশে পেতে চাইছে। সমাজের এই অংশ মতামত তৈরিতে বড় ভূমিকা নেয়। কিন্তু আসল প্রশ্ন হল, মাসে কটা মানুষ ৪০-৪৫ হাজার টাকার বেশি মাইনে পান? যাঁরা মাসে ৪৫ হাজার টাকা মাইনেও পান, তাঁদেরও এই কর কাঠামোর ঘোষণায় কোনও উপকার নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার ঘুরিয়ে বোঝাতে চাইছেন, যাঁদের বেতন বেশি, তাঁদেরও আনন্দে থাকার কারণ নেই। নতুন কর কাঠামোয় সব ছাড়ের সুযোগ কেড়ে নিয়েছে। আসলে বাজেটে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি।