মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, রাজ্যের চিকিৎসকরা ট্রিটমেন্ট করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। এটা খুবই চিন্তার। এর জন্য যা প্রয়োজন করতে হবে। তাঁর কথায়, “আমরা তো বলিনি সাবান দেব না, পিপিই দেব না, মাস্ক দেব না। ফেস শিল্ড দরকার হলে সেটাও দিয়ে দেব আমরা। কী করলে বলুন, আপনারা পেশেন্টদের আরও ভাল চিকিৎসা করতে পারবেন।”
এই আলোচনায় মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের তরফে বলা হয়, সুরক্ষা সামগ্রীর কোনও অভাব নেই, চিকিৎসকদের চেষ্টারও অভাব নেই। কিন্তু তার পরেও মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার একটা কারণ হল, অনেক ক্ষেত্রেই মারণরোগে খুব বেশি অসুস্থ কোনও মানুষ মারা যাচ্ছেন করোনায়। করোনা না হলেও হয়তো মারা যেতেন তাঁরা।
এ কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই পরিসংখ্যানটা নির্ধারণ করতে হবে। কোন অসুখে কতজন মারা যাচ্ছেন, তা দেখতে হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, “আমার নিজের মাঝেমাঝে মনে হয়, আমি সব ছেড়ে দিয়ে মুমূর্ষু রোগীদের পাশে দাঁড়াই, সেবা করি। আমার যা হবে হবে। কারণ যা বোঝা যাচ্ছে, এই অসুখটা হয়তো কারও হয়ে গেছে, নয়তো কারও হবে। ৮০ শতাংশের হবে বলে শুনছি। ফলে চিকিৎসকদেরও তো সুরক্ষা জরুরি। আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে তাঁদের। প্রয়োজনে হোমিওপ্যাথি ওষুধ খান। করতে হবে এগুলো।”
মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব দেন, কোভিড রোগীদের মাথা-মুখ ঢেকে রাখার জন্য ছোট ছোট বক্স করে দেওয়া যেতে পারে। ডাক্তাররা তাহলে রোগী দেখতে গিয়ে আক্রান্ত হবেন না। তিনি বলেন, “আমরা হয়তো একসঙ্গে সব পারব না, তৈরি করতেও তো সময় লাগবে। কিন্তু একটু সময় নিয়ে এটা করে, প্রতিটি বেডে ফিক্স করে দেওয়া যেতে পারে। এটা করতে ১৫-২০ দিন সময় দিতে হবে। তার মধ্যে দরকার হলে মাস্কটা ডবল করে ব্যবহার করুন, পিপিই-টা ভাল করে পড়ুন। আমি ৬০ হাজার আশাকর্মীকে বিশেষ চাদর বানিয়ে দিয়েছি সুতির, যতটুকু প্রোটেকশন সম্ভব তা যেন নেওয়া যায়।”
চিকিৎসকরা এই প্রসঙ্গে জানান, হাসপাতালের নন-এসি অংশে পিপিই পরে আট ঘণ্টা ডিউটি করতে গিয়ে চিকিৎকদের অনেকেরই ডিহাইড্রেশন হচ্ছে, অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। হাসপাতালের কিছু অংশ এসি করে দেওয়া যায় কিনা অথবা নতুন পিপিই-র ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হয়। মুখ্যমন্ত্রী যদিও এই প্রসঙ্গে বলেন, দরজা-জানলা খোলা থাকলে ভাইরাস সহজে চলে যায়। রোদ্দুর, হাওয়া চলাচল জরুরি। তাই এসি থাকলেও সুযোগ পেলে দিনের কিছুক্ষণ সময় জানলা-দরজা খুলে দিতে বলেন তিনি।
শেষমেশ চিকিৎসকদের একটু আরামের জন্য আলাদা করে এসি রুম তৈরি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।