
এ বার মনসার থানও বানিয়ে দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকেই তিনি বলেন, ‘যত তীর্থস্থান রয়েছে তা নিয়ে আমরা একটা ম্যাপ তৈরি করছি’। অর্থাৎ হয়তো তীর্থস্থানগুলিকে নিয়ে একটা ট্যুরিস্ট সার্কিটের কথা বোঝাতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও সুন্দরবনে মনসা পুজো হয়। আমার ঠিক করেছি এই জেলাগুলিতে মনসার থান বানিয়ে দেব”। এ কথা বলেই মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ‘ইমিডিয়েট অন্তত বিশটা মনসার থান বানিয়ে দিতে হবে’।
এ ছাড়াও মাজি থান, জহর থানের প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আর্কিটেক্ট দিয়ে একটাই বেদী বানিয়ে দেওয়া হবে। সেখানেই সব থাকবে।
শাস্ত্র বা পুরানে মা মনসার উল্লেখ নেই। মা মনসা লোকায়ত দেবী। বাংলার কাব্য সাহিত্যে মনসার মহিমার বহু বর্ণনা রয়েছে। মূলত সাপের কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই মা মনসার পুজো হত। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ছাড়া দক্ষিণবঙ্গে সুন্দরবনে সাপের উৎপাত এক সময়ে খুবই বেশি ছিল। পূর্ব বাংলাতেও মনসা পুজোর চল ছিল।
আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার পর যে পঞ্চমী তিথি (শ্রাবণ), তাকে নাগপঞ্চমী বলে। নাগপঞ্চমীতে উঠোনে সিজগাছ স্থাপন করে মনসা পূজা করা হয়। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণা পঞ্চমী পর্যন্ত পূজা করার বিধান রয়েছে। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে এক মাস ধরে পুজো করে শেষে বিশেষ পুজো করা হয়। কেউ কেউ পাঁঠা বলিও দেয়।
আষাঢ় মাস আবার আগামী বছর আসবে। অনেক দেরি। কিন্তু তার আগে ভোট আসছে বাংলায়। মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের ঘোষণাকেও অনেকে তাই ভোটের সঙ্গে জুড়ে দেখতে চাইছেন। যেমন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সঙ্গে হিন্দুত্বের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। কোনও প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব না থাকলে মন্দির, মসজিদ, থান গড়ে দেওয়া সরকারের কাজ নয়। এটা সংবিধান বিরুদ্ধ। তাঁর কথায়, ভাবলে খারাপ লাগে বাংলাকে কী ভাবে জাতপাত, ধর্ম, সম্প্রদায়, শ্রেণিতে ভাগ করা হচ্ছে স্রেফ রাজনৈতিক কারণে। এর পরিণাম ভাল হতে পারে না।