Latest News

আদানির পতনে এলআইসির ক্ষতি, অভিষেক বললেন কেন সিবিআই-ইডি তদন্ত করবে না

দ্য ওয়াল ব্যুরো: এড়িয়ে গেলেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বরং আদানিদের শেয়ার দরে পতন, এলআইসির বিপুল অঙ্কের ক্ষতি ইত্যাদি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন তুললেন, ‘কেন ইডি, সিবিআই তদন্ত করবে না?’

শনিবার ডায়মন্ড হারবারে ছিল অভিষেকের প্রশাসনিক সভা। সেই সভার পর সাংবাদিকরা অভিষেককে প্রশ্ন করেন, আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার দরের পতনে এলআইসির ১৬ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার প্রতিক্রিয়া কী? দুটি বাক্যে জবাব দেন অভিষেক। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘এই বিষয়টি এলআইসি কর্তাদের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। কেন এক্ষেত্রে ইডি বা সিবিআই তদন্ত করবে না?’

‘এই অপরাধ হাজার বার করব’, শুভেন্দুকে জবাব অভিষেকের

শুক্রবার দিনভর ও শনিবার সকাল থেকে যখন আদানিদের শেয়ারের দামে পতন নিয়ে জাতীয় রাজনীতি আন্দোলিত তখন অনেকেই কৌতূহল প্রকাশ করছিলেন, তৃণমূলের অবস্থান কী হবে? একদিকে আদানি নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ। অন্যদিকে রাজ্যে তাঁদের বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগের আশ্বাস রয়েছে। এ হেন পরিস্থিতিতে তৃণমূল কী করবে?

বিকেলে দেখা গেল এ ব্যাপারে কোনও ধোঁয়াশা রাখলেন না অভিষেক। তিনি যেহেতু এখন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং দলের কার্যত নাম্বার টু সেহেতু এটাকে দলের অবস্থান বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে বলে মত অনেকের। তাছাড়া এসব বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আগে অভিষেক দিদির সঙ্গে আলোচনা করেননি, নিজের মতো বলে দিয়েছেন, তেমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই বলেই অনেকের মত। অর্থাৎ অভিষেক এদিন বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, নির্দিষ্ট ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিতে তৃণমূলের কোনও দোদুল্যমানতা নেই।

এবার একটু পিছনের ঘটনাক্রম ফিরে দেখা যাক—

২০২১ সালের ডিসেম্বরে শীতের এক সন্ধ্যা। হঠাৎ দ্য ওয়াল-এর প্রতিনিধিদের কাছে ফোন বেজে উঠল। ওদিক থেকে জনৈক বললেন, ‘খোঁজ নিন, নবান্নে গৌতম আদানি এসেছেন।’ সে খবর যে কোনও সাংবাদিকের কাছেই ছিল ছটফট করার মতো। যতক্ষণ না কনফার্ম হওয়া যাচ্ছে ততক্ষণ যেন শান্তি নেই। তারপর নবান্ন সূত্র নিশ্চিত করল, হ্যাঁ! চোদ্দতলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে রয়েছেন স্বয়ং গৌতম আদানি।

সেই ছবি ছিল বাংলার শিল্পয়ায়নের আন্তর্জাতিক বিপণনের ফ্রেম। তারপর আদানির ছেলের আসা, তাজপুর বন্দরে বিনিয়োগের ঘোষণা করা, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে তাঁদের উপস্থিতি পেরিয়ে সময়টা যখন ২০২৩-এর জানুয়ারি তখন আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দরে মহাপতন ঘটে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তোলপাড় চলছে দেশের অর্থনীতিতে। নেপথ্যে মার্কিন অর্থ গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট। যারা দাবি করেছে, আদানি গোষ্ঠী ছদ্ম সংস্থার মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে তাঁদের শেয়ারের দাম বাড়িয়ে রেখেছিল। এই রিপোর্টের পরে বুধ ও শুক্রবার স্টক এক্সচেঞ্জে আদানিদের শেয়ার যেভাবে ধসেছে তাতে ক্ষতি হয়েছে সাড়ে চার লক্ষ কোটি টাকা।

আদানি গোষ্ঠী যদিও হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টকে ভিত্তিহীন ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বলে বিবৃতি দিয়েছে। আইনি পথে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে গৌতম আদানীর শিল্প সাম্রাজ্য। পাল্টা আবার ওই সংস্থা আদানিদের আইনি যুদ্ধে স্বাগত জানিয়েছে।

এ হেন পরিস্থিতিতে সিবিআই, ইডিকে দিয়ে তদন্ত করানোর দাবি তুললেন অভিষেক। যা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত অনেকের।

You might also like