
কোভিড ১৯ মোকাবিলায় সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকায় ‘গর্বিত’, ‘খুশি’ পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর চিঠি, আপ্লুত প্রধান বিচারপতি
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনাভাইরাস অতিমারীর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকার প্রশংসা করে সরাসরি দেশের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্নাকে চিঠি লিখে তাঁর মন জয় করে নিল কেরলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। লিডউইনা জোসেফ নামে মেয়েটির বয়স মাত্র ১০। ত্রিশূরের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। করোনা অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দিল্লি সহ গোটা দেশ যখন নাজেহাল, তখনই সে চিঠি লিখেছে প্রধান বিচারপতিকে। সরকারের ভ্যাকসিন পলিসি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক তীক্ষ্ন অভিমতের জেরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের ১৮র ওপর সব নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের টিকা দেওয়ার ঘোষণা করলেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই লিডউইনার চিঠির কথা জানাজানি হল।
তাতে সে লিখেছে, দিল্লি ও দেশের অন্যত্র করোনায় মৃত্যুর ঘটনায় খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। সংবাদপত্র পড়ে বুঝেছি, মাননীয় আদালত কোভিড ১৯ বিরোধী লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট-যন্ত্রণা, মৃত্যুতে সফল ভাবে হস্তক্ষেপ করেছে। আমি খুশি, গর্বিত যে, মাননীয় আদালত অক্সিজেন সরবরাহের নির্দেশ দিয়ে অনেক জীবন বাঁচিয়েছে। আমি বুঝতে পেরেছি, দেশে কোভিড ১৯ সংক্রমণ ও বিশেষত দিল্লিতে মৃত্যুহার কমাতে মাননীয় আদালত কার্যকর পদক্ষেপ করেছে। এজন্য মাননীয় বিচারপতি আপনাকে ধন্যবাদ। এখন আমি অত্যন্ত গর্বিত, আনন্দিত। চিঠির সঙ্গে সে জুড়ে দিয়েছে হাতে আঁকা একটি ছবি, যাতে দেখা যাচ্ছে, চশমা পরা একজন বিচারক আদালতের দণ্ড দিয়ে করোনাভাইরাসের মাথায় আঘাত করছেন। বিচারকের পিছনে দেওয়ালে ঝুলছে মহাত্মা গাঁধীর একটি ছবি। পাশে তেরঙ্গা পতাকা।
লিডউইনার চিঠি পড়ে মুগ্ধ প্রধান বিচারপতি। তাঁর ‘সুন্দর চিঠি’ ও ‘একজন কর্মরত বিচারকের উষ্ণতায় ভরা ছবি’র জন্য তাঁর উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, যেভাবে তুমি দেশের ঘটনাবলীর ওপর নজর রেখেছ, অতিমারী আবহে দেশবাসীর কল্যাণের জন্য তোমার যে উদ্বেগ ঝরে পড়েছে, তাতে সত্যিই দারুণ খুশি আমি। তুমি বড় হয়ে একজন সতর্ক, সচেতন ও দায়িত্ববান নাগরিক হয়ে উঠে দেশগঠনে বিরাট অবদান রাখবে, আমি এ ব্যাপারে নিশ্চিত। এই ভাষাতেই ছোট্ট মেয়েটিকে শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন বিচারপতি রামান্না। ভারতীয় সংবিধানের একটি কপিতে স্বাক্ষর করেও মেয়েটিকে পাঠিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি ভ্যাকসিন ও অন্যান্য জরুরি ওষুধপত্র সংগ্রহের পিছনে কেন্দ্রের খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলে কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন ক্রয়ের যাবতীয় তথ্য চেয়েছে, জনসংখ্যার কত শতাংশকে ভ্যাকসিনের একটি ও দুটি ডোজ দিয়েছে, তাও জানতে চেয়েছে। দেশের জনসংখ্যার বাকি অংশকে কীভাবে ভ্যাকসিন দিতে চায়, সেই প্ল্যান জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। মিউকরমাইকোসিস মোকাবিলায়ই বা কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তাও জানাতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।