
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলার বনমন্ত্রী হলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick)। তবে তৃণমূলে সবাই তাঁকে বালু নামেই এক ডাকে চেনেন। বুধবার বিধানসভা অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বনমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে এমন প্রশ্নও ধেয়ে আসবে তিনি কি কল্পনাতেও আন্দাজ করতে পেরেছিলেন?
বিধানসভায় শাসক দলের উপ মুখ্যসচেতক হলেন প্রবীণ নেতা তাপস রায়। এমনিতে তাঁর রাশভারী গলা। ইদানীং গাল ভরা দাড়ি রেখেছেন। সেই সঙ্গে মাঝে মধ্যে এমন সব মন্তব্য করছেন যে তার বিবিধ অর্থ বের করে জল্পনা চলছে বাংলার রাজনীতিতে। বুধবার দেখা যায়, অধিবেশন শুরু হতেই বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায় বনমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, বনমন্ত্রীর কাছে আমার একটা প্রশ্ন রয়েছে। তা হল, আপনার জন্মদিনে কি পশ্চিমবঙ্গের কোনও জঙ্গলে চিতা (Cheetah) ছাড়া হবে?
তাপস রায় এই প্রশ্ন করতেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু হো হো করে হেসে ওঠেন। দেখা যায়, বাকি সদস্যরাও হাসছেন। কেউ কেউ হাসতে হাসতে প্রায় সতীর্থর গায়ে ঢলে পড়ছেন। বিরোধী দলের কেউ কেউও মুখ চাপা দিয়ে হাসছেন!
কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর জন্মদিনে মধ্যপ্রদেশের কুনো অভয়ারণ্যে ৮ টি চিতা (Cheetah) ছেড়েছেন। ভারতে চিতা লুপ্তপ্রায়। তাই নামিবিয়া থেকে ওই চিতাগুলিকে আনা হয়েছে ভারতে। তার পর দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নিজে গিয়ে কুনো জঙ্গলে সেই চিতাগুলো (Cheetah) ছেড়েছেন, তাদের ছবি তুলেছেন। তার পর সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে হু হু করে। তা দেখে পরক্ষণেই আবার টিপ্পনি কেটেছেন কেউ কেউ। আর মনমোহন সিং সরকার জমানার পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ পুরনো কাগজপত্র বের করে বলেছেন, নরেন্দ্র মোদী হলেন সবচেয়ে বড় মিথ্যুক।
জয়রামের কথায়, মোদী সরকার এমন ভাব দেখাচ্ছে যে চিতাগুলো আনার বন্দোবস্ত তারা করেছে। আদলে ২০১০ সালে পরিবেশ মন্ত্রী থাকার সময়ে এ ব্যাপারে নামিবিয়াকে আমি চিঠি লিখেছিলাম। ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে ৮টি চিতা দিতে রাজি হয়েছিল নামিবিয়া। সে ব্যাপারে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সই হয়েছিল। পরবর্তী কালে সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে স্থগিতাদেশ দেয়। সেই স্থগিতাদেশ সর্বোচ্চ আদালত প্রত্যাহার করার পর এখন চিতাগুলো আনা হল। আর বর্তমান সরকার কিনা তার ক্রেডিট নিচ্ছে!
প্রধানমন্ত্রী চিতা ছাড়লেন জঙ্গলে, দেখুন ভিডিও
সন্দেহ নেই নরেন্দ্র মোদীকে খোঁচা দিতেই তাপস রায় এদিন কৌশলে বাংলার বনমন্ত্রীকে প্রশ্নটি করেছিলেন। এও ঘটনা হল, বাংলায় চিতা বাঘ থাকলেও চিতা নেই। চিতা বাঘ ও চিতা দুটি ভিন্ন প্রাণী। সেদিক থেকে তাপস রায়ের প্রশ্ন একেবারে অমূলক বলা যাবে না।
কিন্তু তাপস রায়ের প্রশ্ন শুনে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি এই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনার অনুমতি দিচ্ছি না। এর উত্তরও দিতে হবে না বনমন্ত্রীকে।