
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তিনি অসহায় দুঃস্থ মহিলা। অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য। দিনের পর দিন এমনই জীবন সংগ্রামের গল্প শুনিয়ে সম্ভাব্য খরিদ্দারদের মন গলাতেন ‘মহিলা।’ তারপর ভুয়ো জমি, ফ্ল্যাট বিক্রির নাম করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিতেন তাঁদের থেকে। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ পেয়ে তদন্ত নেমেছিল বিধাননগর থানার পুলিশ। তারপর ফাঁদ পেতে হাতেনাতে ধরে গ্রেফতার করেছিল ‘মহিলাকে।’ কিন্তু প্রতারকের পরিচয় খুঁজতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের! মহিলা কই, এ যে একজন পুরুষ (Jadavpur man posed as woman to cheat people)!
হ্যাঁ, গ্রেফতারির আগে পর্যন্ত কিছুই জানা যায়নি। বারাসতের বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল নামে এক যুবক সম্প্রতি বিধান নগর পূর্ব থানায় এক মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ওই মহিলা নিজের দুরবস্থার কাহিনি শুনিয়ে অত্যন্ত সস্তায় জমি বিক্রি করতে চেয়েছিল তাঁকে। তাঁর কষ্টের কথা শুনে অগ্রিম টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বিকাশ। কিন্তু জমি তো হাতে পাননি বটেই, টাকাও ফেরত পাননি। বস্তুত তারপর থেকে চেষ্টা করেও ওই মহিলার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি।

এরপরেই তদন্তে নামে পুলিশ। ‘ক্লায়েন্ট’ সেজে পুলিশকর্মীরাই যোগাযোগ করেন প্রতারক মহিলার সঙ্গে। জমি কিনতে চান বলে জানাতেই অভিযুক্ত ‘মহিলা’ খরিদ্দাররূপী পুলিশকেও একই দুঃখের কাহিনী শোনায়। এরপর
সালোয়ার কামিজ পরে দরদাম করার জন্য ক্রেতার সঙ্গে দেখাও করতে চলে আসে সে। তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, বিকাশ অভিযোগ পত্রে যা যা জানিয়েছিলেন ঠিক একই পদ্ধতিতে তাঁদেরও ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে মহিলা। এরপরেই তাকে গ্রেফতার করেন পুলিশকর্মীরা।
আর তারপরেই জানা যায়, মহিলা নয়, অভিযুক্ত একজন পুরুষ। তার নাম অনিন্দ্য চক্রবর্তী। সে কলকাতা যাদবপুরের বাসিন্দা। শুধু বিকাশই নয়, আরও বহু জনকে একইভাবে প্রতারণা করেছে সে। এমনকী, অনেককেই সল্ট লেকের বিভিন্ন জায়গায় ফাঁকা জমি দেখিয়ে নিজেকে সেই জমির মালকিন বলে দাবি করে টাকা হাতিয়েছে সে।
গত বুধবার অনিন্দ্যকে গ্রেফতার করে বিধান নগর পূর্ব থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে সল্টলেকের একটি আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক তার পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
আর হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হয় না মাকে, তাঁর জন্য কী এমন করলেন ছেলে? ভাইরাল তাঁদের গল্প