
গ্রিন পাস নিয়ে বিরোধের মধ্যেই ভারতের চাপে কোভিশিল্ডকে স্বীকৃতি ৮ ইউরোপীয় দেশের
বুধবার ভারত জানিয়ে দিয়েছিল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন, এই দুই ভারতীয় ভ্যাকসিনকে স্বীকৃতি না দিলে তাদের ডিজিটাল কোভিড সার্টিফিকেটও মানবে না। এটা পারস্পরিক দেওয়া নেওয়ার ভিত্তিতে হবে। গতকাল বিদেশমন্ত্রকের সূত্রে বলা হয়েছিল, কোয়ারান্টিন থেকে ছাড়ের প্রশ্নে ভারত পারস্পরিক দেওয়া নেওয়া নীতি প্রয়োগ করবে। মানে ইইউ দেশগুলি কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন নেওয়া লোকজনকে গ্রহণ না করলে ভারতেও ওইসব দেশ থেকে আসা লোকজনকে বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে ইউরোপীয় মেডিসিনস এজেন্সি, ফ্রান্সের সঙ্গেও কথা বলেছে ভারত। যারা কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিনের ডোজ নিয়েছেন. তাঁদের একইরকমের ছাড় দেওয়ার বিষয়টি পৃথক ভাবে বিবেচনা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলিকে বলেছিল ভারত।
আজ থেকেই ইইউভুক্ত দেশগুলিতে যাত্রা করতে গেলে গ্রিন পাস চাই। যারা একটি ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের এই গ্রিন পাস থাকলে বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে না।
বুধবার সেরামের সিইও আদার পুনাওয়ালা অবশ্য কোভিশিল্ডের ইইউয়ের গ্রিন পাস অনুমোদন না পাওয়ার বিষয়টি লঘু করে দেখান। বলেন, বিষয়টি ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো হচ্ছে। এটা কোনও বিতর্কই নয়। ইউরোপীয় মেডিসিনস এজেন্সি আমাদের আবেদন জানাতে বলে ঠিকই করেছে। আমরা মাসখানেক আগে অ্যাসট্রাজেনেকার মাধ্যমে আবেদন জানাই। সেই প্রক্রিয়ায় কিছু সময় লাগে। আমরা নিশ্চিত ওরা কোভিশিল্ডকে অনুমোদন করবে। না দেওয়ার কোনও কারণ নেই কেননা এটা অ্যাসট্রাজেনেকার ডেটার ভিত্তিতে করা। আর আমাদের পণ্য কমবেশি অ্যাসট্রাজেনেকার মতোই।
প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় মেডিসিনস এজেন্সি এর আগে চারটি মাত্র ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছিল। ফাইজার-বায়ো এনটেকের কোমিরনাটি, মার্কিন বড় ওষুধ কোম্পানি মডার্নার ভ্যাকসিন, ভ্যাক্সজেরভ্রিয়া নামে ইউরোপে তৈরি ও বিক্রি হওয়া অ্যাসট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ও জনসন ও জনসনের তৈরি জ্যানসেন। যারা এই ভ্যাকসিনগুলি নিয়েছেন, শুধু তারাই ভ্যাকসিনেশন পাসপোর্ট পাবেন, অতিমারীর মধ্যে বিনা বাধায় ভ্রমণ করতে পারবেন।
কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন–কোনওটাই এই তালিকায় এতদিন ছিল না।
গত মাসে ভারত সরকার জি৭ দেশগুলির স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের বৈঠকেই ভ্যাকসিন পাসপোর্টের বিরোধিতা করেছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন এ ব্যাপারে ট্যুইট করেন, অতিমারী কালে ভ্যাকসিন পাসপোর্টের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ জানাই, তীব্র বিরোধিতা করি। উন্নত দুনিয়ায় জনসংখ্যার যত শতাংশকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তার তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এখনও কম হয়েছে। তাই এমন উদ্যোগ অত্যন্ত বৈষম্যমূলক হতে পারে।