
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণবঙ্গের চৌকি গুমটি ১১৮ ব্যাটেলিয়নের কর্মীরা তাঁদের এলাকা থেকে ২ জন বাংলাদেশী পাচারকারীকে প্রায় সাড়ে ছয় কেজি গাঁজা এবং ৪৩ হাজার বাংলাদেশি মুদ্রা সহ গ্রেফতার করে। জানা যায়, এই চোরাকারবারীরা উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিএসএফ জানতে পারে, পাচারকারীরা প্রত্যেকেই ছিল বাংলাদেশি। গত লকডাউনের সময় তারা চোরাপথে এদেশে ঢুকেছিল।
এরপর গত ৭ ফেব্রুয়ারি সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের অধীন ১৭৯ ব্যাটেলিয়নের আইসিপি পেট্রাপোলের জওয়ানরা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এক বাংলাদেশি ট্রাক ড্রাইভারকে হাতেনাতে ধরে। যার কাছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ছিল। পেট্রাপোলের কার্গো কমপ্লেক্সের আমদানি পার্কিং এলাকায় বিএসএফ সদস্যরা তাকে থামায়। এরপর তল্লাশি চালিয়ে তার ট্রাউজারের পকেটে লুকানো বাদামি টেপে মোড়ানো তিনটি প্যাকেট পাওয়া যায়। সে যেন পালাতে না পারে তাই সঙ্গে সঙ্গে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
ওই তিনটি ব্রাউন প্যাকেট খুলতেই উদ্ধার হয় ২০ হাজার কানাডিয়ান ডলার ও ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। এ ছাড়াও তার কাছ থেকে ২৬০০ বাংলাদেশি টাকা ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত সেই বৈদেশিক মুদ্রা এবং ট্রাকের ভারতীয় মুদ্রায় মোট মূল্য প্রায় ৪৯ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৬৩ টাকা।
শেষ অবধি ৮ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ মঙ্গলবারেও দক্ষিণ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের অধীন, আইসিপি পেট্রাপোলে ১৭৯ ব্যাটেলিয়নের কর্মীরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একজন ভারতীয় ট্রাক চালককে হাতেনাতে পাকড়াও করে। তার কাছ থেকেও উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। তল্লাশি চালানোর সময় ট্রাকের ফুয়েল ট্যাঙ্কের কাছে লুকিয়ে রাখা খবরের কাগজের সাথে সাদা টেপে মোড়ানো তিনটি প্যাকেট পাওয়া যায়। সেই প্যাকেটগুলি খুলতেই দেখা যায় ভেতরে রয়েছে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই বৈদেশিক মুদ্রা, ট্রাক এবং তাতে লোড করা পণ্যের মোট মূল্য আনুমানিক ৪৬ লক্ষ ৩ হাজার ৪৫৫ টাকা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, সে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার বাসিন্দা।
গত কয়েকদিনের মধ্যেই পরপর তিনবার এভাবে অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের ঘটনায় সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগ কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে তাঁরা বলেছেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। বিএসএফ এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডার সংস্থা পেট্রাপোল বা অন্যান্য সীমান্তে চোরাচালান রোধে সদাসতর্ক থাকবে।