
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ডেঙ্গি ভাইরাস তার চরিত্র বদলেছে বলে দাবি করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। ডেঙ্গির বাহক এডিস মশাও ভোলবদলে পারদর্শী। জিনের বদল ঘটিয়ে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন দেখা যাচ্ছে, ম্যালেরিয়ার বাহক অ্যানোফিলিস (anopheles stephensi) মশাও রূপ বদলে ফেলছে। জিনের গঠনবিন্যাসের এমন পরিবর্তন ঘটাচ্ছে অ্যানোফিলিস মশা যে কীটনাশকেও রোখা সম্ভব হচ্ছে না। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ডেঙ্গির থেকেও ম্যালেরিয়া (Malaria) বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলজি বিভাগের গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, ম্যালেরিয়ার মশা অ্যানোফিলিস চরিত্র বদল করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ পতঙ্গবিদ, অধ্যাপক-গবেষকদের ধারণা, মশার স্বভাব বৈশিষ্ট্যেও অনেক বদল এসেছে। আগে দেখা যেত, অ্যানোফিলিস মশা নোংরা জলে ডিম পাড়ছে, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এই মশা পরিষ্কার জলেও ডিম পাড়ছে। ঘরের ভেতরে, প্লাস্টিকের জিনিসে জমা জলেও বংশবিস্তার করছে মশা। ফলে মশার সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনই রোগও ছড়াচ্ছে দ্রুত। এমনিতেও আবহাওয়ার ভোলবদল হচ্ছে। এমন পরিবেশে ডেঙ্গি-বাহক এডিস মশার থেকে বেশি পরিমাণে জন্মাচ্ছে, ম্যালেরিয়ার বাহক অ্যানোফিলিস মশা। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

ভোল বদলাচ্ছে ম্যালেরিয়ার মশা, বিভ্রান্ত বিজ্ঞানীরা
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এডিস ইজিপ্টাই (Aedes aegypti), অ্যানোফিলিস স্টিফেনসাই (anopheles stephensi) ও কিউলেক্স বিশনোই (Culex vishnui) মশার সংখ্যা শত চেষ্টাতেও কমানো সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণই হল, এই প্রজাতির মশারা তাদের জিনের গঠন বদলে ফেলছে। ফলে তাদের চরিত্রেও বদল আসছে। সংখ্যায় বেড়ে চলেছে।
পতঙ্গবিদেরা বলছেন, এক সময় ম্যালেরিয়ার মশা মারতে ডিডিটি দেওয়া হত, তাতে মশার সংখ্যা অনেক কমেছিল। কিন্তু দেখা গেল, মশারা শেষ পর্যন্ত হার মানেনি। ডিডিটি ছড়ালেও আর মশা মরছে না। জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে তারা ডিডিটি প্রতিরোধী হয়ে গিয়েছে। ম্যালাথিয়ন কীটনাশকও হজম করে ফেলেছে মশারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন দেখা যাচ্ছে ম্যালেরিয়ার মশা পরিষ্কার জলেও ডিম পাড়ছে। আগে দেখা যেত,অ্যানোফিলিস মাটিতে কিংবা ঘরের বাইরে রাখা পাত্রের জলে ডিম পাড়ছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এডিস মশার মতো বাড়ির ছাদে জমা জলেও ডিম পাড়ছে।