
মৃতের পরিবারসূত্রে জানা গেছে, সুরজ রায় এবং তুষার সাহা দুজনেই পরস্পরের দীর্ঘদিনের বন্ধু। তুষার ব্যবসায়ী। সুরজও ব্যবসা করেন। দুই বন্ধু একই এলাকায় দীর্ঘকাল পাশাপাশি বসবাস করছেন। বেশ কিছুদিন আগে বিশেষ প্রয়োজনে বন্ধুর কাছ থেকে বিরাট অঙ্কের টাকা ধার করেছিলেন সুরজবাবু। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরও সে টাকা শোধ দেওয়ার নামগন্ধ করছিলেন না তিনি।
পরিবারের দাবি ৪ঠা সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাড়িতে একাই ছিলেন তুষারবাবু। রাত আনুমানিক সাড়ে নটা নাগাদ তিনি বাড়ির পাশেই বন্ধু সুরজের বাড়িতে পাওনা টাকা ফেরত চাইতে যান। টাকার প্রসঙ্গে দুই বন্ধুর মধ্যে বচসা শুরু হয়। ঝগড়ার মধ্যেই উঠে গিয়ে আচমকা ঘরের ভিতরে থেকে দরজার ডাসা তুলে নিয়ে এসে তুষারবাবুর মাথায় সজোরে আঘাত করেন তাঁর বন্ধু। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধুর বাড়ির উঠোনেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তুষার সাহা। এরপর প্রতিবেশীদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন তার বাড়ির লোকজন।
আহত তুষারবাবুকে কোনওক্রমে তখনই চাকদা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই রাত্রেই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তুষারবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের পরিবারের তরফে স্থানীয় চাকদহ থানায় সুরজ রায়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
মৃতের স্ত্রী ঝুমা সাহা শনিবার ৫ই সেপ্টেম্বর সংবাদমাধ্যমকে জানান, “সুরজ ও তুষার দুজনেই দীর্ঘদিনের বন্ধু। ৪তারিখ সন্ধেয় আমি বাড়ি ছিলাম না। প্রতিবেশীদের টেলিফোন মারফত জানতে পারি এই ঘটনার কথা। হসপিটালে গিয়ে দেখি মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন আমার স্বামী তুষার। আমার স্বামীকে হত্যা করার অপরাধে আমি সুরজের শাস্তি দাবি করছি।” কিন্তু কেন এই দুর্ঘটনা? বন্ধুর কাছে কী কারণে কত টাকা পেতেন তুষারবাবু – সে ব্যাপারে কিছুই স্পষ্ট করে জানেন না বলে দাবি মৃতের পরিবারের।
পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানা গেছে, সন্ধ্যা থেকেই মদের আসর বসিয়ে মদ খাচ্ছিলেন দুই বন্ধু। মদের ঘোরেই প্রথমে দুজনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। তারপর হাতাহাতি। সেই গন্ডগোল ঝগড়ার মধ্যে তুষারবাবুর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হলে মৃত্যু হয় তাঁর।
এই আকস্মিক অঘটনে চাকদহ পৌরসভার 11 নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘটনা যাই হোক, দোষীর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসীরা।